আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর: কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার অটলভাবে কাজ করে চলেছে। বর্তমান সরকারের আমলে কৃষকেরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছেন, যা অতীতে দেখা যেত না। ধলাই জেলার সালেমার কেভিকেতে আয়োজিত উদ্ভিদ জাত সংরক্ষণ ও কৃষক অধিকার আইন বিষয়ক কর্মশালা ও উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
মন্ত্রী জানান, উদ্ভিদ জাত সংরক্ষণ ও কৃষক অধিকার আইন (২০০১) নতুন উদ্ভিদজাত সংরক্ষণে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কৃষকদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়। এ আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো উন্নত জাত উদ্ভাবনে উৎসাহ দেওয়া, কৃষকদের অধিকার রক্ষা করা এবং কৃষি বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করা।
তিনি আরও জানান, উদ্ভিদ জাত সংরক্ষণ ও কৃষক অধিকার আইন কর্তৃপক্ষ কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বশাসিত সংস্থা।
মন্ত্রী বলেন, এই আইনের ফলে ফসলের জাত কৃষকদের নামে নিবন্ধিত হবে এবং সেই জাতের ওপর কৃষকের পূর্ণ অধিকার থাকবে। উন্নত ও উদ্ভাবনী বীজ সুরক্ষা, ঐতিহ্যবাহী জাত সংরক্ষণে কৃষকের ভূমিকাকে স্বীকৃতি, মানসম্মত বীজের সহজলভ্যতা, গবেষণাকে উৎসাহিত করা এসবই আইনের লক্ষ্য।
তিনি উল্লেখ করেন আগে কোনো কৃষককে মঞ্চে স্থান দিতে কেউ আগ্রহ দেখাত না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কৃষকের সম্মান বেড়েছে।
মন্ত্রী বলেন অনেক কৃষক, বিজ্ঞানীদের থেকেও বেশি জানেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বারবার বলেছেন বিজ্ঞানীদের ল্যাব থেকে জমিতে যেতে হবে এবং প্রথমে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কৃষকরাই অন্নদাতা, কৃষকরাই প্রকৃত ঈশ্বর। কৃষি মন্ত্রী বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে কৃষকদের উন্নয়নে সবধরনের সহায়তা দিতে হবে।
মন্ত্রী জানান দেশের জনসংখ্যা ১৪৫ কোটি, যার মধ্যে ২০ কোটি কৃষক। ত্রিপুরার জনসংখ্যা ৪২.২২ লাখ, আর কৃষক ৪.৭২ লাখ এবং এরা-ই আমাদের খাদ্য যোগান দেন। তাই কৃষকরাই ঈশ্বর। কৃষক, মহিলা, যুবক ও গরিব এই চার শ্রেণির উন্নয়নেই গড়ে উঠবে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’। রাজ্যে এখন কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসলের ওপর অধিকার পাচ্ছেন। কৃষিই ত্রিপুরার অর্থনীতির প্রধান চাকা। আমাদের সরকার আসার পর রাজ্যের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই দিনে মন্ত্রী চারজন কৃষকের হাতে উদ্ভিদ প্রজাতি নিবন্ধন শংসাপত্র তুলে দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন রতন দাস তার ‘চালকুমড়া লোকাল’ প্রজাতির জন্য, চিন্তা রানি দেববর্মা তার বেগুনের ‘হুন্তোক’ প্রজাতির জন্য, প্রমোদ লাল দাস উন্নত ‘মোগাই সীন’ প্রজাতির জন্য এবং দয়ামতি দেববর্মা তার ‘দানা মাইসিঙ্গা’ প্রজাতির জন্য।
আজ মন্ত্রী সালমা স্থিত কৃষক প্রবীর দাসের জমিতে ARC আলু রোপণ করেন এবং কুলাইয়ে পশ্চিম লালঝড়ি গ্রামে ভুট্টা খেত ও পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়িকা স্বপনা দাস পাল, বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দেববর্মা, বিধায়ক সম্ভু লাল চাকমা প্রমুখ।

