উত্তর ভারতচন্দ্রনগরের বিষ্ণুপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামীকে ঘিরে সন্দেহ

বিলোনিয়া, ৩ নভেম্বর : বিলোনিয়া থানাধীন উত্তর ভারতচন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর এলাকায় এক মধ্যবয়স্কা গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতার নাম সঞ্জু দাস সরকার। শনিবার রাতে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় বিলোনিয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।

স্বামী সাধন সরকারের দাবি, গতকাল সঞ্জুর হঠাৎ ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। দিনের বেলা তেমন গুরুতর না হলেও রাতে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

তবে মৃত্যুর খবর পেয়েই বিলোনিয়া শহর সংলগ্ন সুকান্তনগর থেকে হাসপাতালে ছুটে আসেন মৃতার মা, ভাই ও বোনেরা। তাঁদের অভিযোগ, সঞ্জুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, “ডায়রিয়া হলে একদিনেই কেউ মারা যায় না। নিশ্চয়ই এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে।”

জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর আগে সঞ্জুর সঙ্গে সাধন সরকারের বিবাহ হয়েছিল। স্বামীর আগেও দুটি বিয়ে ছিল — এক স্ত্রী মারা গিয়েছেন এবং অন্যজন সংসার ছেড়ে চলে গেছেন। অর্থাৎ সঞ্জু ছিলেন সাধনের তৃতীয় স্ত্রী। স্বয়ং সাধন সরকার এই তথ্য স্বীকার করেছেন।

সঞ্জুর পরিবারের আরও প্রশ্ন, “যদি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাহলে আমাদের খবর দেওয়া হল না কেন? কেন মৃত্যুর পরেই জানানো হল?” তাঁদের দাবি, মেয়ের মৃত্যুর পেছনে স্বামীই দায়ী।

ঘটনার খবর পেয়ে বিলোনিয়া মহিলা থানার পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশের কাছে লিখিতভাবে জানায়। পুলিশ ইতিমধ্যে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে, মৃতার ১৪ বছরের এক সন্তান রয়েছে। তবে মায়ের মৃত্যুর বিষয়ে সে আতঙ্কে কিছুই বলতে পারছে না, যা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট হবে এই মৃত্যু রোগে স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি পরিকল্পিত হত্যা। এদিকে ঘটনার পর থেকেই গোটা বিষ্ণুপুর এলাকায় নেমে এসেছে চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক।