কাবুল, ২২ অক্টোবর: আফগানিস্তানের তালিবান সরকার পাকিস্তানের তরফ থেকে আসা ভারতের বিরুদ্ধে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ চালানোর অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে নাকচ করেছে। আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ ইয়াকুব এই অভিযোগকে “ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে মন্তব্য করেছেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াকুব, যিনি তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র, স্পষ্টভাবে বলেন, “আমাদের নীতিতে অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ভারত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাই।”
আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। আমাদের লক্ষ্য উত্তেজনা সৃষ্টি নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তি রক্ষা। আমরা চাই কাতার ও তুরস্ক এই শান্তিচুক্তি পর্যবেক্ষণ করুক এবং তা কার্যকর করতে সাহায্য করুক। শর্ত একটাই—কোনো দেশ যেন অন্য দেশের ভূখণ্ড লঙ্ঘন না করে।”
১১ অক্টোবর আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে হঠাৎ করেই সংঘর্ষ বেড়ে যায়। এর আগে তালিবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারতের ঐতিহাসিক সফরে এসেছিলেন, যেটি পাকিস্তানকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলে। সেই সময় থেকেই ইসলামাবাদ দাবি করে, তালিবান ভারতের হয়ে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “আফগান সরকার ভারতের কোলে বসে ভারতের হয়ে যুদ্ধ করছে।”
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়স্বাল কড়া জবাব দিয়ে বলেন, “পাকিস্তান বরাবরের মতোই নিজের ব্যর্থতার দায় প্রতিবেশীদের ঘাড়ে চাপাতে চায়। তারা নিজেই সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেয়, সেই সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ে উপমহাদেশে।”
তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
যদিও ভারত এখনও তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, তবুও পররাষ্ট্র দফতরের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ও যোগাযোগের মাধ্যমে সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত মিলছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানের সম্পর্ক যেভাবে অবনতি ঘটছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

