নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ অক্টোবর:
রাজ্যে রেগা কর্মচারীদের পূজার মাসের বেতন এখনও পর্যন্ত না দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আমরা বাঙালী দল। দলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যেখানে অন্যান্য সরকারি কর্মচারীরা গত ২৬ সেপ্টেম্বরই অগ্রিম পূজার বেতন পেয়েছেন, সেখানে রেগা কর্মচারীদের এখনও বেতন মেলেনি।
দলের অভিযোগ, “আজ দিচ্ছে কাল দিচ্ছে” বলে সরকার সময়ক্ষেপণ করছে। অথচ মাসের ১৫ তারিখ পার হলেও রেগা কর্মচারীরা বেতন না পেয়ে ধর্নায় বসেছেন। তবুও তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
প্রেস বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ত্রিপুরা সরকারকে রেগা প্রকল্পের জন্য ১৮ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার খরচ দেখিয়েছে প্রায় ৩১ কোটি টাকা, যার মধ্যে বেতন বাবদই খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। অথচ রাজ্যে রেগা কর্মচারীর সংখ্যা মাত্র ২,৬০০ জন। দলের অভিযোগ—অতিরিক্ত ১৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, কিন্তু তার কোনো সুস্পষ্ট জবাব দিতে পারেনি সরকার বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
এছাড়াও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পুর নিগমের ১৬ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায়ও সরকারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। বিরোধী দলগুলোর চাপের মুখে তদন্ত শুরু হলেও টাকা উদ্ধার হবে কিনা তা অনিশ্চিত।”
আমরা বাঙালী দলের বক্তব্য অনুযায়ী, পূজার আগে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও অধিকাংশ ওয়ার্ডেই কাজ হয়নি। কেবল পূজার কয়েক দিন আগে সামান্য কিছু কাজ হয়েছে, বাকিটা অজানাই থেকে গেছে। দলের অভিযোগ, “দুর্নীতির এই চক্র প্রশাসনের স্বচ্ছতা নষ্ট করছে। অনেকেই সরকারি টাকায় প্রাসাদোপম বাড়ি, ফ্ল্যাট বা সম্পত্তি কিনছে।”
প্রেস বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, রাজ্যের অর্থ দপ্তর ও গ্রামীণ উন্নয়ন দপ্তরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সমন্বয়হীনতা চলায় এই আর্থিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। দলের প্রশ্ন—“নতুন অর্থবর্ষের মাত্র ছয় মাস অতিক্রান্ত, তার মধ্যেই অতিরিক্ত ১৩ কোটি টাকা খরচ হলো কীভাবে?”
আমরা বাঙালী দলের দাবি, রেগা প্রকল্পে বড়সড় ঘোটালা হয়েছে কিনা তা নিয়ে অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি দ্রুত রেগা কর্মচারীদের বেতন প্রদান করতে হবে এবং যদি দুর্নীতির প্রমাণ মেলে, তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
দলের মন্তব্য অনুযায়ী, “রাজ্যে আত্মপ্রচারের প্রতিযোগিতা বাড়ছে, কিন্তু তার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই।”

