চণ্ডীগড়, ১৫ অক্টোবর : পাঞ্জাব সীমান্ত দিয়ে মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে যখন সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) তৎপরতা বাড়িয়েছে, তখন পাকিস্তান-ভিত্তিক পাচারকারীরা নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বিএসএফ-এর পাঞ্জাব ফ্রন্টিয়ারের উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মাদক পাচারে পাকিস্তানি গ্যাংগুলি এখন এমন ‘ফ্রেশ’ মুখ বেছে নিচ্ছে যাদের নামে কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, যাতে তারা আইনগত নজরদারির বাইরে থাকে। শুধু তাই নয়, তারা তাদের ভারতীয় দোসরদের নির্দেশ দিচ্ছে নাবালকদের ব্যবহার করতে, যাতে ধরা পড়লেও আইনের কঠোর শাস্তি এড়ানো যায়।
এই পরিস্থিতিতে বিএসএফ তাদের নজরদারি ও অভিযান আরও জোরদার করেছে। চলতি বছর ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিএসএফ ২০৩ জন ভারতীয় এবং ১৬ জন পাকিস্তানি মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। এই ধরপাকড় মূলত পাঞ্জাবের অমৃতসর, তরন তরন ও ফেরোজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও, তিনজন পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীকে সীমান্তে গুলি করে নিষ্ক্রিয় করেছে বিএসএফ।
পাকিস্তান থেকে ড্রোন ও জিপিএস-নির্ভর প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাদক পাঠানোর প্রবণতা রুখতে বিএসএফ মাটির উপরে ও আকাশপথে নজরদারি বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, মুভমেন্ট সেন্সর ও নাইট ভিশন যন্ত্র। চলতি বছরে এখনো পর্যন্ত ২০০টি পাকিস্তানি ড্রোন আটক করা হয়েছে এবং উদ্ধার হয়েছে ২৮৭ কেজি হেরোইন, ১৩ কেজি আইস ড্রাগ, ১৭৪টি আগ্নেয়াস্ত্র (যার মধ্যে রয়েছে একাধিক AK-47), ১২টি হ্যান্ড গ্রেনেড ও ১০ কেজিরও বেশি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক।
বিএসএফ-এর মুখপাত্র ও ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে বিদ্যারথী জানান, সীমান্তবর্তী কিছু গ্রামের বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য করছেন এবং পাঞ্জাব পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ অভিযানের ফলে স্থানীয় দোসরদের খুঁজে বের করতে সুবিধা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “সীমান্ত সুরক্ষায় জনসচেতনতা ও জনসহযোগিতা অপরিহার্য। সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে এই মরণ নেশার বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী হবে।”

