চেন্নাই, ১৮ সেপ্টেম্বর : ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, তামিলনাড়ুর অধিকাংশ জেলায় বৃহস্পতিবার ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ ভারতের ওপর উচ্চস্তরের ঘূর্ণিঝড়ীয় সঞ্চলন এবং নিম্নস্তরের সংঘর্ষের কারণে ২১টির বেশি জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কঞ্চিপুরামের শ্রীপেরুম্বুদুরে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮ সেমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চেন্নাইয়ের মণালি নিউ টাউন ১৩ সেমি, আরিয়ালুর জেলার গুরুভাদি ১০ সেমি এবং চেন্নাইয়ের করাট্টুর, পরিমুনাই ও এনোড়ে ৯ সেমি বৃষ্টি হয়েছে।
আইএমডি জানিয়েছে, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও করাইকালে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ ও বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। বাতাসের গতি ৪০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত উঠতে পারে। সেপ্টেম্বর ২০ পর্যন্ত এই ধরনের আবহাওয়া বজায় থাকার আশঙ্কা রয়েছে। নিলগিরি, এরোডে, কৃষ্ণগিরি, ধর্মাপুরী, সেলাম, তিরুভন্নামালাই, তিরুপত্তুর, ভেল্লোর, রণিপেট, চেঙ্গালপট্টু, কঞ্চিপুরাম, কল্লাকুরিচি, ভিলুপুরাম, কুড্ডালোর, পেরাম্বালুর, আরিয়ালুর, তিরুচিরাপল্লি, মায়িলাদুতুরাই, নাগাপট্টিনম, তিরুভারুর ও থানজাবুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তিরুভল্লুর, রণিপেট, ভেল্লোর ও কঞ্চিপুরামে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চেন্নাই ও আশেপাশের এলাকায় মেঘলা আকাশ থাকবে এবং মাঝে মাঝে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে।
আইএমডি সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সতর্কতা দিয়েছে। গালফ অফ মান্নার, কোমোরিন সাগর ও দক্ষিণ তামিলনাড়ুর উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি/ঘণ্টা গতি সম্পন্ন ঝড়ো হাওয়া বইবে, যার গতি কিছু সময়ের জন্য ৬০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত যেতে পারে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার জন্য সতর্ক থাকতে এবং জেলা প্রশাসনকে বন্যা ও যানজট মোকাবিলায় সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, হায়দ্রাবাদে বুধবার রাতের বৃষ্টিতে শহরের অনেক এলাকা প্লাবিত ও জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বেগমপেটের বালকামপেট আন্ডারপাসে প্রবল বৃষ্টির জলে এক যুবক শরফুদ্দিন বাইক চালানোর সময় পানিতে ডুবে মারা গেছেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে না পেরে হতাশ হয়েছেন। বৃষ্টির কারণে সেকুন্দরাবাদ ও অন্যান্য নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, অনেক পরিবারের জিনিসপত্র ধুয়ে গেছে।
গ্রেটার হায়দ্রাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র বিজয়লক্ষ্মী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং উদ্ধার কাজ তদারকি করছেন। হায়দ্রাবাদের মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিদের দ্রুত ও সমন্বিত ত্রাণ কাজ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। উদ্ধার ও যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য বিভিন্ন টিম কাজ করছে।
আইএমডি তেলেঙ্গানার জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। আগামী ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত ও ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। হায়দ্রাবাদ ও আশেপাশের এলাকায় ৪০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাসের গতি সহ বৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসন জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং জলাবদ্ধতা ও প্লাবিত স্থানে যাতায়াত এড়াতে বলেছেন।
—

