নয়াদিল্লি, ১৫ সেপ্টেম্বর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কলকাতায় ১৬তম কম্বাইন্ড কমান্ডার্স কনফারেন্স-এর উদ্বোধন করবেন এবং সম্মেলনে ভাষণ প্রদান করবেন। এই তিন দিনব্যাপী সামরিক-বেসামরিক শীর্ষ বৈঠক, যা ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে, এবারের থিম ‘সংস্কারের বছর – ভবিষ্যতের জন্য রূপান্তর’। ভারতের নিরাপত্তা কৌশল, ভবিষ্যৎ সামরিক পরিকল্পনা এবং তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বিহারের পুরনিয়া জেলায় গিয়ে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের প্রকল্পে সূচনা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে পুরনিয়া বিমানবন্দরের নবনির্মিত ইন্টারিম টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন, যা থেকে আজই দেশীয় বিমান পরিষেবা চালু হবে। প্রধানমন্ত্রী পুরনিয়া থেকে জাতীয় মাখানা বোর্ডেরও সূচনা করবেন, যা মাখানার উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, রপ্তানি এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা করবে। উল্লেখযোগ্য যে, বিহার দেশের মোট মাখানা উৎপাদনের প্রায় ৯০ শতাংশই জোগান দেয়।
বিদ্যুৎ খাতে, প্রধানমন্ত্রী ভাগলপুর জেলার পীরপাইন্টিতে ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং এটি বিহারের বেসরকারি খাতে সর্ববৃহৎ বিনিয়োগ। প্রকল্পটি আল্ট্রা-সুপারক্রিটিকাল ও কম নির্গমন প্রযুক্তিতে নির্মিত হবে, যা রাজ্যের বিদ্যুৎ নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
কৃষি ও জলসম্পদ খাতে, প্রধানমন্ত্রী কোশি-মেচি আন্তঃরাজ্য নদী সংযোগ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন, যার ব্যয় প্রায় ২,৬৮০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেচের পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব হবে। রেলখাতে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমশীলা-কাটারেহ এবং আরারিয়া-গলগালিয়া রেললাইন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করবেন, যার সম্মিলিত ব্যয় প্রায় ৬,৫৮০ কোটি টাকা।
এছাড়াও, তিনি জোগবানি-দানাপুর বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, সাহারসা-ছেহারতা এবং জোগবানি-ইরোডের মধ্যে অমৃত ভারত এক্সপ্রেস সহ একাধিক নতুন ট্রেন পরিষেবার সূচনা করবেন, যা উত্তর ও পূর্ব বিহারের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। পশুপালন খাতে প্রধানমন্ত্রী পুরনিয়ায় সেক্স-সোর্টেড সিমেন উৎপাদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন, যা পূর্ব ভারত ও উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে প্রথম এবং বছরে পাঁচ লক্ষ ডোজ উৎপাদনে সক্ষম।
অবশেষে, প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ ও নগর) আওতায় প্রায় ৬০ হাজার উপভোক্তার গৃহপ্রবেশে অংশ নেবেন এবং ৫০০ কোটি টাকার কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বিতরণ করবেন ডে- এনআরএলএম -এর আওতায়। এই অনুষ্ঠানে বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মোহাম্মদ খান, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাও উপস্থিত থাকবেন। আজকের এই সফর বিহারের উন্নয়ন ও পূর্ব ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

