চণ্ডীগড়, ১ সেপ্টেম্বর : পাঞ্জাবে গত ৩৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন, বহু কৃষকের সারা বছরের ফসল জলে ভেসে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার ফোনে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান-এর সঙ্গে কথা বলেন ও রাজ্যবাসীর পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রী মানকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, পর্যাপ্ত সংখ্যক এনডিআরএফ বাহিনী এবং সেনা শিবির মোতায়েন করে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে সাহায্য করবে কেন্দ্র। তিনি জানান, কেন্দ্র রাজ্যের পাশে থেকে মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই স্কুল বন্ধ করার পর সোমবার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলিও ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হরজোত সিং বেইন্স এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ লেখেন,
“পাঞ্জাবজুড়ে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সমস্ত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৩রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হোস্টেলে থাকা ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।”
রবিবার অমিত শাহের নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের জন্য পৃথক ইন্টার-মিনিস্টেরিয়াল সেন্ট্রাল টিম গঠনের ঘোষণা করে। এই দলগুলি বন্যা, ভূমিধস, ক্লাউডবার্স্ট এবং অতিবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির সরেজমিন পর্যালোচনা করবে।
আগামী সপ্তাহের শুরুতে এই দলগুলি বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলি পরিদর্শন করবে বলে জানানো হয়েছে। এই দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের আটটি জেলার প্রায় ১,৩০০টি গ্রামের ২.৫০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ৩ লক্ষ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে একটি চিঠিতে রাজ্যের ৬০,০০০ কোটি টাকার বকেয়া ছাড়ের দাবি জানান।
বর্তমানে, ৩৩% ফসলহানির ক্ষেত্রে ৬,৮০০ টাকা প্রতি একর হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। আপ সরকার চায় এই হার বাড়িয়ে ৫০,০০০ টাকা প্রতি একর করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, এই পরিস্থিতিতে প্রথাগত নিয়ম বদলে রাজ্যের কৃষকদের যথাযথ সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুনীল জাখরও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সহায়তা পাঠানোর অনুরোধ করেছেন। ৩০ আগস্ট তারিখে লেখা চিঠিতে জাখর বলেন, “এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় পাঞ্জাবের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। পাঞ্জাব ভারতের খাদ্য নিরাপত্তার মেরুদণ্ড, এই রাজ্যের পুনর্গঠন জাতীয় স্বার্থের অংশ।
উল্লেখ্য, পাঞ্জাবে বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক, এবং রাজ্যবাসীর পাশে দাঁড়াতে রাজ্য ও কেন্দ্র দুই-ই তৎপর হয়েছে।

