নয়াদিল্লি, ১ আগস্ট : লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর তরফে ভোট চুরি সংক্রান্ত অভিযোগকে “অমূলক” বলে প্রত্যাখ্যান করল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের বক্তব্য, এই ধরনের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই এবং এগুলি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা বিষয়ে আলোচনা করতে গত জুন মাসে রাহুল গান্ধীকে একটি ইমেল ও একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি তার কোনও জবাব দেননি। বরং তিনি “উন্মত্ত অভিযোগ” তুলেছেন এবং কমিশন ও তার কর্মীদের হুমকি দিয়েছেন বলেও কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে।
শুক্রবার বিহারের বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন বিষয়ে সাংবাদিকদের রাহুল গান্ধী বলেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। আমাদের কাছে পরিষ্কার প্রমাণ রয়েছে যে নির্বাচন কমিশন এই চক্রান্তে জড়িত। এই প্রমাণ সামনে এলে গোটা দেশ বুঝবে নির্বাচন কমিশন কাদের হয়ে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস নিজের উদ্যোগে এই বিষয়ে তদন্ত করে এবং যা প্রমাণ পাওয়া গেছে তা একটি “পারমাণবিক বোমা” সদৃশ।
নির্বাচন কমিশন আমাদের তদন্তে সহযোগিতা করেনি, তাই আমরা নিজেরাই ছয় মাস ধরে খতিয়ে দেখি। এবং যেটা পেয়েছি, সেটা জাতীয় স্তরের বিস্ফোরণ ঘটাবে। এই বিস্ফোরণের পরে দেশে নির্বাচন কমিশন খুঁজে পাওয়া যাবে না, বলেন রাহুল গান্ধী।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ থেকে নিচস্তর পর্যন্ত যাঁরা এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত, তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না। আপনারা ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করছেন, এটা দেশদ্রোহিতার সমান। আপনারা যেখানেই থাকুন, অবসরপ্রাপ্ত হলেও আপনাদের খুঁজে বের করা হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা এই ধরনের “অমূলক অভিযোগ ও হুমকি”কে গুরুত্ব দিচ্ছে না। প্রতিদিন এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমরা সব নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলছি, আপনারা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে কাজ চালিয়ে যান, বলা হয়েছে কমিশনের বিবৃতিতে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, রাহুল গান্ধীকে গত ১২ জুন ভোটার তালিকা সংক্রান্ত আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে ইমেল ও চিঠি পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি কোনও দিন কমিশনের কাছে কোনও চিঠি পাঠাননি। অথচ আজ বেপরোয়া অভিযোগ ও হুমকি দিচ্ছেন। এটা নিন্দনীয়! বলেছে কমিশন।
এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধী এখন আর শিশু নন, তিনি লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর এমন দেশবিরোধী বক্তব্য ও সংসদে বাধা সৃষ্টি করা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়, বলেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী।
এই মুহূর্তে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এবং কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও, কমিশনের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতা বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

