ভারতে আবার কোভিডের হালকা উত্থান, দিল্লি, মুম্বই, কেরালা-সহ একাধিক রাজ্যে সতর্কতা জারি

দিল্লি, ২৪ মে : দীর্ঘ কয়েক মাস শান্ত থাকার পর ফের একবার কোভিড-১৯ সংক্রমণ চোখ রাঙাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন শহরে। দিল্লি, মুম্বই, কেরালা, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি মৃদু, তবুও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

দিল্লিতে তিন বছর পর নতুন করে ২৩টি করোনা সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। এই খবরে দিল্লি সরকারের তরফে সমস্ত হাসপাতালকে বেড, অক্সিজেন সিলিন্ডার, করোনা টেস্ট কিট এবং ভ্যাকসিন মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী পঙ্কজ সিং জানিয়েছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টটি সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো এবং আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। দিল্লির সঙ্গে সঙ্গে এনসিআর-এর নয়ডা ও গাজিয়াবাদেও করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে।

কেরালায় মে মাসে ২৭৩টি করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে, যা এই মুহূর্তে দেশের মধ্যে সর্বাধিক। এই পরিস্থিতিতে কেরালার সমস্ত জেলায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং হাসপাতালে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হালকা কাশি বা সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকলেই মুখ ঢাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মুম্বইয়ে মে মাসে ৯৫টি করোনা সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। থানে জেলায় গত তিন দিনে ১০টি নতুন সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। যদিও প্রশাসন জানিয়েছে, সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত রয়েছে।

কর্ণাটকে এখনও পর্যন্ত ৩৫টি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যার মধ্যে হোসকোটের একটি ৯ মাসের শিশুও রয়েছে। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস -এর উপসর্গ থাকলে পরীক্ষার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

অন্ধ্রপ্রদেশে এখনো সংক্রমণ বেড়ে না উঠলেও, সেখানকার সরকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন, পিপিই কিট এবং তিন স্তরের মাস্ক মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এশিয়ার বিভিন্ন করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে যাত্রা করে ফেরা ব্যক্তিদের জন্য করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংক্রমণের পেছনে থাকতে পারে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট JN.1, যা বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় সক্রিয়। তবে ডাব্লিউএইচও একে এখনো “ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন” হিসেবে ঘোষণা করেনি। সংক্রমণের লক্ষণগুলি হালকা এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চার দিনের মধ্যে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি দেখা যাচ্ছে।