ইসলামাবাদ, ১৮ মে : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার পর চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আইএমএফ এখন পাকিস্তান থেকে নিজেদের অর্থ আদায়ে অনিশ্চয়তা দেখছে। ফলে, বিচার-বিশ্লেষণের পর নতুন করে ১১টি কঠোর শর্ত আরোপ করেছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ‘গভীর ঝুঁকি’ তৈরি করেছে।
‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর স্টাফ-লেভেল রিপোর্টে নিম্নলিখিত নতুন শর্তগুলির উল্লেখ রয়েছে ১৭,৬০০ বিলিয়ন রুপির নতুন বাজেট পার্লামেন্টের মাধ্যমে অনুমোদন করাতে হবে; বিদ্যুৎ বিলের উপর বাড়তি সারচার্জ আরোপ করা হবে — ঋণ পরিশোধ বাবদ অতিরিক্ত বোঝা সাধারণ মানুষের উপর; পুরোনো গাড়ি আমদানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে; চারটি প্রাদেশিক ইউনিটে নতুন কৃষি আয়কর আইন চালু করতে হবে। এর আওতায় করদাতাদের সনাক্তকরণ, রিটার্ন প্রসেসিং, কমপ্লায়েন্স বৃদ্ধি এবং তথ্য প্রচার অন্তর্ভুক্ত; সকল পরিকল্পনার সময়সীমা ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত; আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল নির্দেশিত প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সংক্রান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে; ২০২৭ সালের পরবর্তী সময়ের জন্য আর্থিক খাতের কৌশল নির্ধারণ করে তা প্রকাশ করতে হবে; বিদ্যুৎ খাতের চারটি নতুন শর্ত: ট্যারিফ নির্ধারণ, বিতরণ ব্যবস্থার সংস্কার ও আর্থিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনা, বিশেষ করে ২২ এপ্রিল ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধুর’ পাল্টা হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই উত্তেজনা পাকিস্তানের রাজস্ব ঘাটতি, বৈদেশিক লেনদেন এবং অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনা-র ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তান সরকার ২০২৫ অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে ২,৫০০ বিলিয়ন রুপি ব্যয় করতে চায় — যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৮% বেশি। রিপোর্ট জানাচ্ছে, এ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর নির্ধারিত রাজকোষীয় ভারসাম্যের লক্ষ্যগুলোর সম্পূর্ণ বিপরীত।
এই নতুন ১১টি শর্ত যুক্ত হয়ে পাকিস্তানের উপর মোট ৫০টি শর্ত আরোপিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর দাবি, এসব শর্ত শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ভারসাম্যই নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও প্রশাসনিক সংস্কারের জন্যও আবশ্যক।

