নয়াদিল্লি, ৩ মে : ভারত ও অ্যাঙ্গোলা কৃষি, ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা, সংস্কৃতি এবং প্রতিরক্ষা সহ একাধিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেছে।
এই চুক্তিগুলি আজ নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অ্যাঙ্গোলার রাষ্ট্রপতি জোয়াও ম্যানুয়েল গঞ্জালভেস লোরেনসো-এর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল পর্যায়ের বৈঠকের পর বিনিময় করা হয়।
বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব দম্মু রবি সাংবাদিকদের জানান, অ্যাঙ্গোলা ভারত থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনবে, এবং এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই ভারতীয় সরকারি ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি আরও জানান, রাষ্ট্রপতি লোরেনসো ভারতের মাটিতে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করেছেন এবং ভারতের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “সন্ত্রাসবাদ মানবজাতির জন্য এক গুরুতর হুমকি” এবং তিনি পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর অ্যাঙ্গোলার সহানুভূতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত সন্ত্রাসবাদ এবং এর পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী জানান, অ্যাঙ্গোলার সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ভারত ২০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা ঋণ অনুমোদন করেছে এবং এই প্রক্রিয়ায় ভারত অ্যাঙ্গোলার সেনা সদস্যদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করবে।
এই সফরটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি রাষ্ট্রপতি লোরেনসোর ২০১৭ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম ভারত সফর। এটি ভারত-অ্যাঙ্গোলা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর এবং অ্যাঙ্গোলার স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির এক গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতি হওয়ার জন্য অ্যাঙ্গোলাকে শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, “ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকালে আফ্রিকান ইউনিয়নকে স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”
রাষ্ট্রপতি লোরেনসো বলেন, “৩৮ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনও রাষ্ট্রপতির ভারত সফর অ্যাঙ্গোলার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।” তিনি ভারতীয় আতিথেয়তা ও উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সকালেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর রাষ্ট্রপতি লোরেনসোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেখেন, “রাষ্ট্রপতির উষ্ণ মনোভাব ও পারস্পরিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় অত্যন্ত মূল্যবান।”
রাষ্ট্রপতি লোরেনসো তিন দিনের সফরে গতকাল নয়াদিল্লি পৌঁছান। আজ সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা, এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামীকাল তিনি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন, যার লক্ষ্য ভারত-অ্যাঙ্গোলা মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করা।

