নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ২ মার্চ:
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অগ্রীম নোটিশ না দিয়ে খোদ জেলাশাসক অফিসের পাশের তিন পরিবারের বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় তিনদিন ধরে গাছের নীচে বসবাস করছেন তিন পরিবারের এগারো জন সদস্যরা। প্রশাসনের এই অমানবিক কান্ডে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনা কৈলাসহরের গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
ঘটনার বিবরনে জানা যায় যে, কৈলাসহরের গৌরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন নং ওয়ার্ড এলাকায় ঊনকোটি জেলাশাসকের অফিসের একেবারে পাশেই সরকারি জায়গায় অস্থায়ী ঘর বানিয়ে দীর্ঘ সাত আট বছর ধরে তিন পরিবার বসবাস করছেন। ফিরোজ শেখ তার স্ত্রী সহ চারজন, কাদির আলী স্ত্রী সহ চার জন এবং স্বামী পরিত্যক্ত হাসান বেগম ছেলে মেয়ে সহ তিন জনকে নিয়ে তিন পরিবারের এগারো জন সদস্যরা তিনটি আলাদা আলাদাভাবে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে বসবাস করছিলেন। তিন পরিবারের পুরুষরা দিনমজুর করে এবং মহিলারা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার প্রতিপালন করেন। উনারা ভালো করেই জানতেন যে, সরকারি জায়গায় সারাজীবন থাকতে পারবেন না। যেকোনো দিন উনাদেরকে এখান থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে কিংবা এখান থেকে উনাদের চলে যেতে হবে। তাই উনারা স্থায়ী ঘর নির্মান না করে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে বসবাস করছিলেন।
কিন্তু, হঠাৎ করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক একটি দল সাথে কৈলাসহর থানার পুলিশ এসে তিন পরিবারের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দেয়। বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার সময় পরিবারের সদস্যরা বাঁধা দিলে তাদেরকে পুলিশ বেধড়কভাবে মারধোর করেছে বলেও অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়ার পাশাপাশি ঘরের জিনিসপত্র সহ আসবাবপত্র ঢিলে ফেলে দেয় এবং ঘরের পাশে থাকা সব্জিক্ষেতও নষ্ট করে দিয়েছে বলেও জানান। এমতাবস্থায় অসহায় এই তিন পরিবারের সদস্যরা খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন তিনদিন ধরে। তাদের ঘরের পাশে থাকা জেলাশাসক অফিসের পরিত্যক্ত ডেমিজ কোয়ার্টারে আপাতত তাদের ঘরের জিনিসপত্র রেখেছেন বলেও উনারা জানান।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর বাড়ি ভেংগে দেওয়ার সময় উনারা প্রশাসনের কর্তাদের অনেক অনুরোধ করে বলেছিলেন যে, উনাদেরকে যেন একদিন কিংবা তিন চার ঘন্টার সময় দেওয়া হয়। তাহলে উনারা নিজেরাই নিজেদের জিনিসপত্র সরিয়ে নেবেন এবং বাড়ি ঘরও নিজেরাই ভেঙ্গে নেবেন। এতসব বলার পরও প্রশাসনের কর্তাবাবুরা তাদের নিজেদের মানবিক রুপ দেখাননি বলেও অভিযোগ। বাড়ি ঘর ছাড়া আশ্রয়হীন তিন পরিবার দাবী করেছেন অতি শীঘ্রই যেন প্রশাসন তাদেরকে যেকোনো কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে দেন।