নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ১০ ফেব্রুয়ারি:
ই-রিক্সা ও বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে দুই চালক সহ অপর এক আরোহীর মারপিটে অবশেষে মৃত্য হল এক ই-রিক্সা চালকের। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর পদ্মপুর ক্লাবের সম্মুখে। মৃত ইরিক্সা চালকের নাম হরিপদ ভৌমিক(৪৮)। তার পিতার নাম মৃত শ্রীদাম ভৌমিক। বাড়ি কদমতলা থানা এলাকার ইছাই লালছড়া গ্রামে। মৃত ব্যক্তিটি ধর্মনগর হরিচাঁদ রোডে ভাড়া থেকে ই-রিক্সা চালাতেন।
জানা গেছে ওই রাতে ই-রিক্সা নিয়ে শহর থেকে পদ্মপুরের দিকে ভাড়া বাড়িতে ফেরার সময় অপরদিক থেকে বাইকে আসা দুইজন আরোহীর ই-রিক্সার সাথে সামান্য সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর চালক ই-রিক্সা নিয়ে পদ্মপুর ক্লাবের অপর দিকে রাস্তায় বাঁক নিতে গিয়ে উল্টে যায়।স্থানীয় লোকজন ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ধর্মনগর দমকল অফিসে খবর দেন। এদিকে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ওই বাইকে থাকা দুই ব্যক্তি ফিরে এসে ই-রিক্সা চালককে মারধর করতে শুরু করে দেন বলে অভিযোগ। তাকে তারা কিল ঘুষি লাথি মারেতে থাকে। এতে ই-রিক্সা চালক রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করে এলাকার লোকজন সহ পদ্মপুর ক্লাবের সদস্যরা এগিয়ে আসলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বাইক চালক উত্তম ভৌমিক ও তার সঙ্গী জহরলাল নাথ। এরপরই আহত চালককে নিয়ে যাওয়া হয় ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারপর রাতভর চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার গুরুতর আহত চালককে আগরতলার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে আগরতলায় নিয়ে যাওয়ার পথে কমলপুর যাওয়ার আগে তার মৃত্যু হয়। তারপর হরিপদ ভৌমিকের মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় ধর্মনগরে জেলা হাসপাতালে। মৃতের স্ত্রী স্বপ্না রাণী দাস অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়ে ধর্মনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের একজনের বাড়ি পদ্মপুর রাধারমণ আশ্রম রোডে ও অপরজনের বাড়ি বিলথৈ এলাকায়। এদের মধ্যে উত্তম ভৌমিক টিআরটিসির গাড়ি চালক এবং দ্বিতীয় জন জেলা পুলিশ সুপার অফিসে ক্লার্কের দায়িত্বে রয়েছেন।
এই ঘটনার দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন ধর্মনগরের শান্তিপ্রিয় জনগণ।
এদিকে এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাতেই অভিযুক্তদের আটক করতে মাঠ নামে পুলিশ।কিন্তু পুলিশ তাঁদের খোঁজে পায়নি। বর্তমানে অভিযুক্তরা পলাতক বলে খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনার বিষয়ে ধর্মনগর থানার অফিসার ইনচার্জ স্মৃতি কান্তি বর্ধন জানান,লিখিত অভিযোগ মূলে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ১২৬(২)/১০৩/৩(৫) ধারায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে । যার নম্বর ১০/২০২৫। পুলিশ পলাতকদের ধরতে সবদিকে পুলিশি জাল বিছিয়েছে। এদিকে জেলা হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে।