ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা।। অন্যান্য বছরের মতো এবারও ত্রিপুরা মাস্টার ক্রিকেটার্স সমস্ত প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন “সমীরণ স্মৃতি বক্তৃতা”। সাথে ত্রিপুরার হয়ে প্রথম রঞ্জি ট্রফিতে অংশগ্রহণকারী দলটিকেও সংবর্ধনা দেয়া হয়। একসাথে অতীত দিনের দিকপালদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। রবিবার দুপুরে আগরতলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনাচক্রের বিষয় বস্তু ছিল “সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতের ৫০ বছর ও আমরা”। মনোজ্ঞ এক আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক সরযূ চক্রবর্তী, প্রশান্ত চক্রবর্তী ও রাজ্যের রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রাজিব দত্ত প্রমূখ। গত পঞ্চাশ বছরে ভারতের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের অসামান্য উন্নতির কথা প্রত্যেকেই উল্লেখ করেছেন। সেই ত্রিপুরার ক্রিকেট অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েও সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়েই এগিয়ে চলেছে। তাঁদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট যে ঘুরে দাঁড়ানোর সমস্ত রকম প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। মাস্টার ক্রিকেটার্সদের আহ্বায়ক হাবুল ভট্টাচার্য সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন “আমরা বছরে একদিন সমস্ত প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিলিত হতে চাই, তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে চাই, সফলও হচ্ছি। তিনি বলেন দেশের ও রাজ্যের ক্রিকেট নিয়ে আমরা আলোচনা করি, পরামর্শ চাইলে পরামর্শ দিতেও প্রস্তুত। তিনি সমস্ত প্রাক্তন ক্রিকেটারদের এই প্রয়াসে সামিল হতে আহ্বান জানান। ত্রিপুরা মাস্টার ক্রিকেটার্সদের মাস্টার স্ট্রোক ছিল ত্রিপুরার প্রথম রঞ্জি দলের সমস্ত ক্রিকেটারদের সাথে পরবর্তী প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। ঐ ক্রিকেটাররা কি অসাধ্য সাধন করেছেন সেটা না জানলে রাজ্য ক্রিকেটের ইতিহাস কি ভাবে জানা হবে?এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সফলকরে তুলতে প্রথম ঐ দলের অধিনায়ক রজত কান্তি সেনের নেতৃত্বে সবাই প্রায় এসেছিলেন। কেউ কেউ বহিরাজ্যে থাকায় আসতে পারেন নি। সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার ছিল প্রয়াত রঞ্জি ক্রিকেটার মিহির দাসগুপ্তের সহধর্মিনী সুজাতা দাসগুপ্তের, ছেলে, বৌমাকে নিয়ে আসা। তাঁকে মাস্টার ক্রিকেটার্সরা বলেছেন “মিহির দা এখনও আমাদের মধ্যেই বর্তমান”। মিহিরদার স্মারক গ্ৰহন করেছেন সুজাতা দাশগুপ্ত। তারকেশ্বর দাম অসুস্থ। তাঁর ছোট মেয়ে বাবার স্মারক গ্ৰহন করেছে।তারকেশ্বরের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে হল ভর্তি ক্রিকেটপ্রেমীরা। আলোচনাচক্রে দেশের সীমিত ওভারের ক্রিকেট কোথা থেকে কোথায় এসেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ত্রিপুরা কোথায় আছে তাও বললেন প্রশান্ত, সরযূ ও রাজীব। সমস্যার সমাধানে প্রস্তাবও দিয়েছেন। দারুন বলেছেন আজীবন সদস্য মানিক দত্ত প্রাক্তন অধিনায়ক রজত সেনগুপ্ত। কত কঠিন অবস্থার মধ্যে তাঁরা খেলেছেন, শোনালেন। আবার, আগামী বছরের আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি বিমল কুমার রায় চৌধুরী সমাপ্তি ঘোষণা করেন। ক্রিকেটার মণিময় রায়ের তথ্যবহুল সঞ্চালনাও ছিল মুগ্ধকর।