দুর্গাপুর, ১ জুলাই (হি. স.) : গোষ্ঠীকোন্দোলের জের। অবশেষে দলেরই সদস্যদের দফায় দফায় ক্ষোভের মুখে সরে দাঁড়াতে হল অন্ডালের খান্দরা পঞ্চাায়েতের উপপ্রধান। সোমবার দলের নির্দেশে উপপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিলেন গনেশ বাদ্যকর। তার জেরে পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা কাটবে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রশ্ন, বোর্ড গঠনে দলের নির্দেশ না মানায় কি খেসারত দিত হল?
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষনা হতেই অন্ডালে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে শুরু হয়। দিন কয়েক আগে খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের প্রধান, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচার নিয়ে সরব হয়েছিল তৃণমূল দলেরই নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ। এক সপ্তার মধ্যে দু-দুবার পঞ্চায়েত অফিসের কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। প্রধান, উপপ্রধানের পদত্যাগের দাবিও জানান তারা। প্রধান, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই ১৩ পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতির অভিযোগে সোচ্চার হাওয়ায় অস্বস্তিতে পরে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব। রবিবার সকালে খান্দরা বাস স্ট্যান্ড, বটতলা, শিবতলা সহ গ্রামের বিভিন্ন জায়গাতে সাদা কাগজের উপর কালো কালিতে ছাপানো ‘প্রধান, উপপ্রধান চোর” লেখা পোস্টার গুলি চোখে পড়ে বাসিন্দাদের। তবে ছাপানো পোস্টার এর নিচে প্রেরকের নাম না লেখা থাকায় তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। যদিও খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকর এদিন বলেছিলেন,”যারা কাজের মানুষ হয় তাদের নিয়েই সমালোচনা করে। গত একবছরে খান্দরা এলাকায় উন্নয়নের কাজ হয়েছে। তাই বিরোধীদের চোখ ফাটছে। যদি আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে যা শাস্তি হবে মাথা পেতে নেব।” প্রধান এবং উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এই পোস্টার ঘিরে বিড়ম্বনায় পড়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তারপরই নড়েচড়ে বসে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের পক্ষ থেকে উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকরকে পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সোমবার দুপুর নাগাদ গনেশ বাদ্যকর ইস্তফা পত্র দেন অন্ডাল ব্লকের বিডিওর নিকট। আর তাতেই জল্পনা শুরু হয়েছে। বোর্ড গঠনে দলের নির্দেশ না মানায় কি খেসারত দিতে হল? উল্লেখ্য গত ২০২৩ সালে, দেশজুড়ে বামেদের সঙ্গে তৃণমূলের ইন্ডিয়া জোট নিয়ে যখন জোর জল্পনা। তখন, অন্ডালের খান্দরায় সিপিএমের জয়ী সদস্যের সমর্থনে তৃণমূলের উপপ্রধান জয়ী হয়। সেখানে ২৩ আসনের মধ্যে ২০ আসনে তৃণমূলের ও ৩ টি বামেদের দখলে ছিল। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে প্রস্তাব উঠতেই ভোটাভুটির দাবী ওঠে তৃণমূলের জয়ী সদস্যদের একাংশের। নিয়ম মেনেই শুরু হয় ভোটাভুটি। তাতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে প্রধান হয় অপর্না বাদ্যকর। আবার সিপিএমের সমর্থন পেয়ে উপপ্রধান হয় গনেশ বাদ্যকর। যদিও প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি উপ প্রধানের সঙ্গেও। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মন্ডল জানিয়েছেন,” দলের নির্দেশে ইস্তফা দিয়েছে। এবার আশা করা হচ্ছে পঞ্চাায়েতের অচলাবস্থা কাটবে।”