পাথারকান্দি (অসম), ২৪ জানুয়ারি (হি.স.) : নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার পাথারকান্দির লোয়াইরপোয়া ব্লকের হাতিখিরা গ্রাম পঞ্চায়েত (জিপি)–এর সলগই হাইস্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিধানসভা এলাকা ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার অধীন রেশন কার্ড বণ্টন। এতে উপস্থিত ছিলেন অসম বিধানসভার উপাধ্যক্ষ ডা. নুমল মোমিন, বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল, জেলাশাসক মৃদুল যাদব সহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
ভিড়ে ঠাঁসা এদিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় অসমের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লোয়াইরপোয়া ব্লকের ইনচার্জ বিডিও হুসেন আহমেদ ও লোয়াইরপোয়া ব্লক মণ্ডল বিজেপি সভাপতি হৃষিকেশ নন্দী। পরে অতিথিদের বরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা বলেন, বিগত ২০১৩ সালে খাদ্য সুরক্ষা যোজনার শুরুতে এক বা দু টাকা করে নেওয়া হত। পরে তা সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেয় বর্তমান সরকার। এর জন্য তিনি বিজেপি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বর্তমান শিক্ষিত বেকারদের বিভিন্ন অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করেন।
সভায় জেলাশাসক মৃদুল যাদব বলেন, নতুন রেশন কার্ড বিতরণ কর্মসূচির কাজ দশ মাসে সম্পূর্ণ হয়েছে। অসম সরকার ৪২ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৫৪ জন সুবিধাভোগীর জন্য দশ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪৮৯টি নতুন রেশন কার্ড বণ্টন করার কাজ হতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর করিমগঞ্জে ৬,৫২২, দক্ষিণ করিমগঞ্জে ৫,৭৬৭, রামকৃষ্ণনগরে ৬,২০২ এবং পাথারকান্দিতে ৬,২৬৩টি নতুন কার্ড বরাদ্দ হয়েছে। চলতি মাস থেকেই এই সকল সুবিধাভোগী সরকারি চাল পাবেন নিয়মিত।
সভায় স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, গত আট বছর ধরে স্থানীয় জনগণের দাবি ছিল নতুন রেশন কার্ডের। তার বাস্তবায়ন হওয়ায় তিনি খুশি। বিজেপি সরকার পুরনো ধাঁচের পরিকাঠামো বদল করে প্রতিটি সমবায় সমিতিকে নতুন ভাবে কর্মক্ষম করে তুলেছে। এতে পাথারকান্দির নয়টি সমবায় সমিতিকেও ঢেলে সাজানো হয়েছে। এর ফলে উপকৃত হচ্ছেন আমজনতা। যাঁরা এ যাত্রায় নতুন রেশন কার্ড পাননি, তাঁদের পুনরায় সার্ভে করে নতুন রেশন কার্ড প্রদান করা হবে। এছাড়া জনগণের জন্য বহুমুখি উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
সভার প্রধান অতিথি তথা অসম বিধানসভার উপাধ্যক্ষ ডা. নুমল মোমিন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের ওপর বিস্তর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে করিমগঞ্জ জেলায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বিশেষ করে রাস্তাঘাটের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের আমলে সাধারণ মানুষের দুর্দশার অন্ত ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জনগণকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করে চলছেন। ফলে এ সবের সরাসরি সুফল পাচ্ছেন জনগণ।
প্রসঙ্গক্রমে নুমল মোমিন বলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যদি সঠিক সময়ে অসমে পদার্পণ না করতেন, তা–হলে বরাক উপত্যকা বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হয়ে যেত। তাই নেতাজির অবদান কিছুতেই ভুলবেন না দেশবাসী।
এদিন প্রধান অতিথির হাত দিয়ে পাথারকান্দি বিধানসভা এলাকার ২০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ জন সুবিধাভোগীর হাতে নতুন রেশন কার্ড আনুষ্ঠানিক ভাবে বণ্টন করা হয়। পরে অন্যান্য সুবিধাভোগাীরা নিজ নিজ এলাকার সমবায় সমিতির ডিলারদের কাছ থেকে নতু রেশন কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
সমবেত কণ্ঠে দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আজকের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়েছে।