গোয়ালপাড়ায় উচ্ছেদের শিকার ব্যক্তির মৃত্যু, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার প্রভাব


গোয়ালপাড়া (অসম), ১৩ জানুয়ারি (হি.স.) : উচ্ছেদের দুদিন পর গোয়ালপাড়ায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় জনৈক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত ব্যক্তিকে বছর ৫৫-এর বয়াত আলি বলে পরিচয় পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ১০ জানুয়ারি গোয়ালপাড়া জেলার পঞ্চরত্ন রিজাৰ্ভ ফরেস্টে অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল জেলা প্রশাসন এবং বন দফতর। অন্য ৫০টি পরিবারের সঙ্গে উচ্ছেদের শিকার হয়েছিল বয়াত আলির পরিবারও। তাই খোলা আকাশের নীচে প্লাস্টিকের তাবু খাটিয়ে অন্যদের মতো বসবাস করছিলেন বয়েত আলিরা। কিন্তু গত দুদিনের প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে শুক্রবার রাতে মারা যান বয়াত।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বয়াত আলির মৃত্যুর জন্য জেলা বন বিভাগ এবং রাজ্য সরকারকে দায়ী করে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সাব্যস্ত করছে অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আমসু)। তাঁরা বনমন্ত্রী এবং ডিএফওর কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে গোয়ালপাড়া-পঞ্চরত্ন সড়কে অবরোধ গড়ে তুলেছেন।

আমসু নেতারা বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযানে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে পঞ্চরত্ন এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ৫০টি পরিবার তাঁদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে। এই মানুষগুলোর একটাই দোষ, তাঁরা ভূমিহীন। তাঁদের সবাই কেউ রিকশা বা গরুর গাড়ি চালান, কেউ কেউ দিনমজুরের মতো সামান্য কাজের ওপর নির্ভরশীল। অথচ, আশপাশে অসংখ্য উঁচু পাকা বাড়ি আছে, তাদের একটিরও ক্ষতি হয়নি।’

তাঁরা আরও বলেন, পঞ্চরত্ন এবং হুরকাকুচি এলাকায় সরকারি খাস এবং বন বিভাগের ভূমিতে ৯ জানুয়ারি উচ্ছেদের নিৰ্দেশ দিয়েছিল জেলা প্ৰশাসন। কিন্তু এদিন ওই খাস জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল গুয়াহাটি উচ্চ আদালত। এর পরের দিন ১০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগ যৌথভাবে বনাঞ্চলের জমিতে উচ্ছেদ চালায়। একে কেন্দ্র করে ওইদিন এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।

এদিকে জবরদখলকারী পরিবারবর্গের দাবি, ওই জমি বন বিভাগের নয়। তাদের প্ৰশ্ন, যদি বন বিভাগের জমি হয়ে থাকে, তা-হলে ওই গ্রামে সরকার কীভাবে সরকারি ঘর বণ্টন করা হয়েছে? কীভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে জল জীবন মিশনের প্রকল্প?

তাঁদের আরও দাবি, পঞ্চরত্ন এবং হুরকাকুচিতে বিগত ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে ওই সকল পরিবার বসবাস করছেন। বহুদিন ধরে তাঁরা খাজনা দিয়ে আসছেন। এছাড়া ইতিমধ্যে প্ৰত্যেকটি পরিবারকে বিদ্যুৎ সরবরাহও করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উচ্ছেদ অভিযানে পঞ্চরত্ন এবং হুরকাকুচি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হেক্টর ভূমি বেদখলমুক্ত করেছে প্রশাসন। উচ্ছেদ করা হয়েছে ৫০টি পরিবারকে। সেদিন থেকে ওই সব পরিবার এক প্ৰকার খোলা আকাশের নীচে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *