আবুজা, ২৬ ডিসেম্বর (হি. স.) : নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলায় নিহত শতাধিক। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা সোমবার এ তথ্য জানান। রবিবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী কয়েক বছর ধরে ধর্মীয় ও জাতিগত উত্তেজনায় জর্জরিত অঞ্চলটিতে প্রাথমিকভাবে ১৬ জনের প্রাণহানির খবর জানিয়েছিল। তা থেকে বেড়ে একশো ছাড়িয়েছে।
ধর্মীয় ও জাতিগত উত্তেজনায় বিগত কয়েক বছর ধরেই জর্জরিত প্লাতিউ রাজ্যটি। যে অঞ্চলগুলিতে হামলা চালিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী, সেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় পাশাপাশি বসাবস করেন বলেই জানা গিয়েছে। স্থানীয় মুসলিম পশুপালক এবং ক্রিস্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে বিবাদ। জেনে বুঝেই জাতিগত উত্তেজনা তৈরি করতে হামলা চালানো হয়েছে। প্লাতিউ রাজ্যের বোকোসের স্থানীয় সরকারের প্রধান মানডে কাসাহ জানিয়েছেন, শনিবার থেকে শুরু হওয়া বিরোধ সোমবার সকাল পর্যন্ত ছিল। এতে ১১৩ জনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ অঞ্চলে সামরিক গ্যাং স্থানীয়ভাবে দস্যু নামে পরিচিত। ২০টির মতো ভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর এরা সু-সমন্বিত হামলা চালায় এবং তাদের ওপর নির্যাতন করে। তাদের বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, বলেন তিনি। কাসাহ বলেন, আমরা ৩০০ জনের মতো লোককে আহত অবস্থায় পাই। তাদের বোকোস, জোস ও বারকিন লাদির হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় রেডক্রস বোকো অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ১৮টি গ্রামে ১০৪ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল। রাজ্য সংসদের সদস্য ডিকসন কোলম বলেন, বারকিন লাদি অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রামে অন্তত ৫০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত কাজ করার আহ্বান জানান।
প্লাতিউ রাজ্যের গভর্নর ক্যালেব মুতফওয়াং এ হিংসার নিন্দা করেন এবং এ সহিংসতাকে বর্বর, নৃশংস এবং অন্যায় বলে আখ্যা দেন। নতুন করে ধর্মীয় সংঘর্ষের জেরে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুতে সমালোচনার মুখে পড়েছে নাইজেরিয়ার বর্তমান সরকার। চলতি বছরে একাধিক হামলায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্থানীয়দের। এর আগে নাইজেরিয়া সেনার ড্রোন বিস্ফোরণে ৮৫ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। প্রশাসন ওই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে জানায়, জঙ্গি দমন অভিযানে ভুল করে ওই ঘটনাটি ঘটেছিল।

