BRAKING NEWS

দুর্গাপুরে বাংলাদেশী নাবালিকা পাচারচক্রের ধৃত লিঙ্কম্যান

দুর্গাপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর (হি. স.) প্রায় এক মাস পর আন্তর্জাতিক নারি পাচারচক্রের এক লিঙ্কম্যান ধরা পড়ল কমিশনারেট পুলিশের জালে। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ধৃতের নাম লালু হোসেন শাহ। তার বাড়ী কাঁকসা থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন খারিজ করে দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট দুর্গাপুর কাদারোডে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার হয় এক বাংলাদেশী নাবালিকা। ঘটনায় ওইদিন রাত্রে দুর্গাপুর ও পানাগড়ে নাবালিকা পাচারচক্রের এক মহিলা সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যার মধ্যে এক মহিলাসহ দুজনকে পানাগড় বায়ুসেনা জওয়ানের ভাড়া বাড়ী থেকে গ্রেফতার হয়।
ধৃতদের নাম পাপ্পু রজক দুর্গাপুর ভিড়িঙ্গির বাসিন্দা। এছাড়াও, সাইনুর বিবি ও সেখ মুস্তাক আহমেদকে পানাগড় বায়ুসেনা ঘাঁটি লাগোয়া ডাঙাপাড়ায় এক জওয়ানের ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের আদালতে রিমান্ডে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনায় আটক ওই নাবালিকা বাংলাদেশের বাসিন্দা। বয়স আনুমানিক ১৬ বছর। বেকারিতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বাংলাদেশ থেকে এক নাবালিকাকে নিয়ে এসেছিল বলে অভিযোগ।

দুর্গাপুরের কাদারোড যৌনপল্লীতে ওই নাবালিকাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় দুর্বার সংগঠনের প্রতিনিধিদের। সন্দেহবশতঃ ওই নাবালিকাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুর্বারেরে প্রতিনিধিরা। কথায় অসঙ্গতির সঙ্গে কোনও পরিচয়পত্র না থাকায় মেয়েটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তারপরই থানায় নিয়ে গিয়ে নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

আটক হওয়া ওই নাবালিকাকে জেরা করে পুলিশ পাপ্পু রজক, সাইনুর বিবি ও সেখ মুস্তাক আহমেদের হদিশ পায় পুলিশ। সাইনুর ও মুস্তাক স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে দুজন পানাগড় বায়ুসেনা ঘাঁটি লাগোয়া ডাঙাপাড়ায় উমেশ মিশ্র নামে এক বায়ুসেনা জওয়ানের বাড়ীতে ভাড়া নিয়ে থাকত। জানা গেছে, বাংলাদেশের দুই দালাল ওই নাবালিকাকে ভুবনেশ্বরের এক নারী পাচারকারীর হাতে তুলে দেয়। নাবালিকাকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুরের একটি বিউটি পার্লারে। তখন থেকে সে মুস্তাকের স্ত্রীর সঙ্গে থাকত। তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হত। বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে এসকর্ট সার্ভিস দিতে হত তাকে। মুস্তাক গত ২৮ আগস্ট দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি মোড়ে ওই বাংলাদেশি নাবালিকাকে গাড়িতে করে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে পাপ্পু রজক তাকে যৌনপল্লিতে পৌঁছে দেয়। নাবালিকা সেখানে পৌঁছে আশপাশ ঘুরে দেখছিল। তখন স্থানীয় যৌন কর্মীদের সন্দেহ হওয়ায় থানায় খবর দেন তাঁরা। এরপরেই পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। একে একে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মুস্তাক ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন থেকে আসানসোল ও দুর্গাপুরের প্রায় ২০টি হোটেলের নাম পেয়েছে পুলিশ। ওই সব হোটেলে ওই নাবালিকাকে সার্ভিস দিতে হত বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনায় গোটা চক্রের হদিশ খুঁজতে জোর তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার চক্রের এক লিঙ্কম্যান লালু হোসেন শাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিন বিচারক। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে আদালতে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *