শিলচর (অসম), ২৩ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : দক্ষিণ অসমের কাছাড় জেলার কাবুগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে দাঙ্গা–জর্জরিত মণিপুরের বাস্তুহারা কুকি জাতিভুক্ত তিন ডাকাত। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে সোনাই এবং ধলাই পুলিশের যৌথ অভিযানে আটক করা হয় কুখ্যাত তিন ডাকাতকে। পাশাপাশি তাদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মিজোরামের রেজিস্ট্রিকৃত এমজেড ০১ আর ০০১২ নম্বরের দামি হুন্ডাই ক্যায়োটা গাড়ি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দুটি ৯ এমএম পিস্তল এবং ৫০ রাউন্ড সক্রিয় গুলি।
পুলিশের হাতে ধৃত তিন ডাকাতকে যথাক্রমে মণিপুরের কাংপোকপি জেলার সাংদং গ্রামের বাসিন্দা ডিঙ্গেল লালবই মাইকেল, পাওজালেং ডিঙ্গেল এবং থামম্বই ডিঙ্গেল বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা দাঙ্গা-বিধ্বস্ত মণিপুরের বাস্তুহারা কুকি জাতিভুক্ত। গত মে মাসের পর থেকে এরা আইজলের (মিজোরামের রাজধানী) এক অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরের আবাসিক, জানিয়েছেন কাছাড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত দাস।
আজ শনিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত দাস এ খবর দিয়ে জানান, গত প্রায় দু-মাস থেকে কাছাড়ের সোনাই, ধলাই প্রভৃতি মিজোরাম সংলগ্ন অসমের কাছাড় জেলার বিভিন্ন এলাকায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। পুলিশ ডাকাতদের ধরতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি। অবশেষে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে অভিযানে নামে সোনাই থানার পুলিশ। অভিযানে সহযোগিতা নেওয়া হয় ধলাই পুলিশের। বিলাসী গাড়িতে চড়ে তিনজনের এক দুষ্কৃতী দল কাবুগঞ্জে প্রবেশের খবর পেয়ে দু-তিন দিক থেকে এক সঙ্গে অভিযান চালিয়ে সাদা রঙের এমজেড ০১ আর ০০১২ নম্বরের হুন্ডাই ক্যায়োটা গাড়ির গতি রোধ করে আটক করা হয় তিন ডাকাতকে। তাদের ধরে নিয়ে আসা হয় সোনাই থানায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মণিপুরের বাসিন্দা ধৃত তিন ডাকাত মাস-দুয়েক ধরে মিজোরামের আইজল জেলার কলাশিবে অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। এই তিন কুকি যুবক অপরাধ জগতের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর থেকে জড়িত। এমন-কি গত দুমাসে জেলার লস্কর হার্ডওয়ার, জিরিঘাটের একটি ওয়াইন শপ এবং সোনাই এলাকার পেট্রোল পাম্পে ডাকাতি ছাড়াও একাধিক অপরাধজনিত ঘটনায় নাম রয়েছে তাদের।
তিনি জানান, বর্তমানে কাছাড় পুলিশের একটি বিশেষ দল তিন ডাকাতকে জেরা চালিয়ে যাচ্ছে। ডাকাতি কাণ্ড ছাড়া আর কী কী অপরাধের সঙ্গে এরা জড়িত, তা যাচাই করা হচ্ছে, জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত দাস।