বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা অমানবিকতার নজির গড়ল

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জুলাই৷৷ মানুষ ডাক্তারকে সর্বদা ভগবানের দরজা দিয়ে রাখে৷ কিন্তু একাংশ ডাক্তার মানুষকে লাথ মেরে ঘর থেকে বের করে দেয়৷ চিকিৎসা তো দূরের কথা রোগীকে হাত দিয়ে ধরার প্রয়োজনীয়তা বোধ করলেন না চিকিৎসক৷ হাসপাতালের ড্রেনের পাশে পড়ে কাতরাতে থাকে রোগী৷ আর এই অমানবিকতা দেখে হাসপাতালে ছুটে আসেন পাশে থাকা আগরতলা সাব্রুম জাতীয় সড়কের পথচারী এবং এলাকাবাসী৷ হাসপাতালে যখন এ অবস্থা দেখতে পায় ঠিক সে সময় উত্তেজিত হয়ে পড়ে হাসপাতালে চত্বর৷ আর এই  অমানবিকতা দেখা দেয় বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে৷ এ নিয়ে বিশালগড় মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিকের বরখাস্তের দাবি তুলেছেন সাধারণ জনগণ৷
বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা অমানবিকতার নজির গড়ল৷ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীর ঠাঁই হল হাসপাতালের পাশে থাকা ড্রেইনে৷ নিন্দার ঝড় সর্বত্র৷ জানা যায় বিশালগড় মহাকুমা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে হরিশ নগর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা রঞ্জন কর্মকার পায়ের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে আসে৷ রঞ্জন কর্মকার হাটতে পারছিল না৷ রঞ্জন কর্মকার জানায় হাসপাতালে আসার পর এক চিকিৎসক তাকে একটি ইনজেকশন দিয়ে ছেড়ে দেয়৷ তারপর সে কোনক্রমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসে৷
কিন্তু হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পর সে পরে যায় ড্রেইনে৷ দীর্ঘ সময় সে ড্রেইনে পরে থাকলেও হাসপাতালের চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্য কর্মী কেউই তাকে ড্রেইন থেকে তুলে নি৷ রঞ্জন কর্মকার হাসপাতালের পাশে ড্রেইনে পরে দীর্ঘ সময় কাতরাচ্ছিল৷ কিন্তু তাকে দেখার মতো কেউই ছিল না৷ পরবর্তী সময় রঞ্জন কর্মকারের চিৎকার শুনে মহকুমা হাসপাতালের সামনের রাস্তা দিয়ে পথ চলতি লোকজন ছুটে আসে৷ তারাই রঞ্জন কর্মকারকে ড্রেইন থেকে তুলে সমতল জায়গায় নিয়ে আসে৷ পরে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর চাপ দেওয়া হলে তারা কাল বিলম্ব না করে রঞ্জন কর্মকারকে এম্বুলেন্সে করে জিবি হাসপাতালে রেফার করে দেয়৷ ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ তিনি জানান পায়ের ব্যথায় রঞ্জন কর্মকার এক সাথে অনেক গুলি ব্যথার ট্যাবলেট খেয়ে নিয়েছে৷ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসে রোগীর ঠাই হল ড্রেইনে, এটা অমানবিকতার চূড়ান্ত নিদর্শন ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না৷
যেখানে এলাকার বিধায়ক এক দিন পূর্বে বার্তা দিয়েছেন হাসপাতালে আসা রোগীরা যেন সঠিক পরিষেবা পায়৷ সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা রোগীর ঠাই হল ড্রেইনে৷ এখন দেখার এলাকার বিধায়ক কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন৷ বুধবার বিধায়ক সুশান্ত দেব, মহকুমা শাসককে সাথে নিয়ে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন৷ সেই বৈঠকে বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীরা যেন সঠিক পরিষেবা প্রায় তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ কোন ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না৷ বিধায়কের এই বার্তার পরেও হুশ ফিরল না বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের৷ এইবার হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীর ঠাই হল হাসপাতালের পাশে থাকা ড্রেইনে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *