আগরতলা, ১৯ জুলাই (হি.স.) : ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য তথা বক্সনগর কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক শামসুল হক প্রয়াত হয়েছেন।গতকাল গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এবং চার ছেলে সহ বহু আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। তাঁর প্রয়াণে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা.) মানিক সাহা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তিনি আজ সমস্ত সরকারী কার্য্যক্রম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ সকালে তাঁর মরদেহ বিধানসভা প্রাঙ্গনে এবং সিপিআই(এম) ত্রিপুরা রাজ্য দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর নশ্বর দেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা।
সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে শামসুল হক বিধায়ক হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন। তার আগে তিনি বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সোনামুড়া মহকুমা সহ রাজ্য রাজনীতিতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন তিনি। মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি আগরতলা বিধায়ক আবাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সাথে সাথেই তাঁকে জি বি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাত দেড়টা নাগাদ তিনি জি বি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা.) মানিক সাহা তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন এবং পরিবার পরিজনদের এই বিয়োগ ব্যথা সহ্য করার শক্তি প্রদানের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন। পাশাপাশি তাঁর প্রয়াণে আজ সমস্ত সরকারী কার্য্যক্রম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আজ সকালে তাঁর মরদেহ বিধানসভা প্রাঙ্গনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর নশ্বর দেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিধানসভার সদস্যগণ। এদিন উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল। এদিন তিনি শামসুল হকের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বক্সনগর বিধানসভার মানুষের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
পাশাপাশি তাঁর প্রয়াণে প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করেছেন। শামসুল হকের প্রয়াণে সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক গভীরভাবে শোকাহত হয়েছেন। তিনি পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
এদিকে, বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শামসুল হকের প্রয়াণে মন্ত্রী রতন লাল নাথ গভীর ভাবে মর্মাহত হয়েছেন। তাঁর স্বজনহারা পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তাঁর প্রয়াণে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী টিংকু রায় ও মুখ্য সচেতক কল্যানী রায়ও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বিধায়ক শামসুল হকের প্রয়াণে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এদিন সুদীপ বাবু বলেন, শামসুল হক একজন সজ্জন ব্যক্তি এবং পরোপকারি মানুষ ছিলেন। তাঁর মৃত্যু বক্সনগর বিধানসভার মানুষের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
এদিন তাঁর মরদেহ সিপিএম মুখ্য কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে দলীয় কর্মীরা তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী রতন ভৌমিক, মানিক দে সহ অন্যান্যরা। প্রসঙ্গত, বক্সনগর কেন্দ্রের বিধায়ক শামসুল হকের অকাল প্রয়াণে বিধানসভায় সিপিএমের সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০। এখন ত্রিপুরায় ধনপুর এবং বক্সনগর কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে।