করমণ্ডল দুর্ঘটনার প্রথম খবর কলকাতার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে দেন ট্রেনে থাকা জওয়ান

কলকাতা, ৪ জুন (হি. স.) ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা স্টেশনের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার মুখে পড়তেই প্রথম কলকাতার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে খবর দেন ট্রেনে থাকা একজন জওয়ান । এখানেই থেমে থাকেননি ভেঙ্কটেশ। ঊর্ধ্বতন কর্তাকে জানানোর পরই হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ লোকেশন পাঠিয়ে দেন। যাতে উদ্ধারকারী দল দ্রুত পৌঁছতে পারে দুর্ঘটনাস্থলে।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে তামিলনাড়ু যাচ্ছিলেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ান ভেঙ্কটেশ এনকে। ৩৭ বছরের ভেঙ্কটেশের বাড়ি তামিলনাড়ু। পোস্টিং ছিল কলকাতায়। ছুটি নিয়ে সেখানেই যাচ্ছিলেন তিনি। শালিমার থেকে শুক্রবার দুপুরে চেপেছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এসি থ্রি টায়ার কোচে। ৫৮ নম্বর সিট ছিল ভেঙ্কটেশের । তীব্র গতিতে ছুটে চলা ট্রেনটি আচমকাই বিকট ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। সহযাত্রীরা একে অপরের ওপর পড়ে যায়। ট্রেনের কামরার আলোগুলি নিভু নিভু, হঠাৎই সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। এমন ছবি দেখে, ভেঙ্কটশের বুঝতে অসুবিধা হয়নি কী ঘটেছে। নিজের উপস্থিত বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে তৎক্ষনাৎ কলকাতায় নিজের ঊর্ধ্বতন কর্তাকে ফোন করে জানান, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে! এখানেই থেমে থাকেননি ভেঙ্কটেশ। তিনি যেহেতু নিজে একজন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ান, তাই নিজের কর্তব্য থেকে পিছু হটতে পারেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তাকে জানানোর পরই হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ লোকেশন পাঠিয়ে দেন। যাতে উদ্ধারকারী দল দ্রুত পৌঁছতে পারে দুর্ঘটনাস্থলে।

এনডিআরএফের এক আধিকারিকের কথায়, ভেঙ্কটেশের থেকেই প্রথম খবর পাই এই দুর্ঘটনার। ভেঙ্কটেশ নিজেও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন। প্রথমে কামরার ভিতরের যাত্রীদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেন। কার কী বিপদ হয়েছে সেটা বুঝে নেন। নিজের মোবাইলের টর্চ লাইট ব্যবহার করে, একে একে যাত্রীদের কামরার বাইরে নিয়ে আসেন ভেঙ্কটেশ।একজন এনডিআরএফের জওয়ান ইউনিফর্ম পরে থাকুক বা না থাকুক, সবসময়ই তাঁরা ‘ডিউটি’তে থাকেন। সেটাই দেখা গেছে ভেঙ্কটেশের ক্ষেত্রেও।

ভেঙ্কটেশের কথায়, ‘কত দ্রুত সম্ভব, কামরা থেকে যাত্রীদের বাইরে আনা যায়, সেটাই মাথায় ঘুরছিল। স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকাজে সাহায্য করেন। এই সংকটের মুহূর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তা এককথায় অবিশ্বাস্য।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *