আগরতলা, ২১ মার্চ (হি. স.) : ত্রিপুরায় গোমতী জেলায় উদয়পুরে মাতা ত্রিপুরসুন্দরী মন্দিরে অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী রইলেন পুণ্যার্থীরা। ২৮ বার চেষ্টার পর পাঠা বলি সম্পন্ন হয়েছে। ইতিপূর্বে সর্বোচ্চ ১৬ বার চেষ্টায় পাঠা বলির নজির রয়েছে। তবে, আজকের ঘটনা সকলকেই অবাক করেছে। পশুপ্রেমীরা আওয়াজ তুলেছেন, মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে বলি প্রথা বন্ধ হোক।
মন্দিরের পুরোহিত প্রসেনজিত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রতিদিন মাতার মন্দিরে বলি হচ্ছে। পুণ্যার্থীরা মানত করেন এবং মন্দিরে বলি দেন। পাঠা, পায়রা বলি রোজই হচ্ছে। কিন্তু, আজ একটি পাঠা বলি দেওয়ার সময় বিঘ্ন ঘটেছে। তিনি জানান, ২৮ বার চেষ্টার পর বলি সম্পন্ন হয়েছে। সাধারনত একবারেই রোজ বলি সম্পন্ন হয়ে থাকে।
এ-বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে শুদ্ধ মনে বলির জন্য উত্সর্গ না হলে তা গ্রহণ হয় না। আবার অনেক সময় দেখা গেছে, বলি দেওয়ার আগেই পুণ্যার্থী আত্মীয় স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে আসেন। বলি দেওয়ার পর তাঁদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করবেন। এমন অবস্থায় বলি বিঘ্ন হওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাঁর কথায়, আজকের ঘটনায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই পুণ্যার্থী বলি দেওয়ার আগে বাড়ি থেকে কয়েকজনকে নিমন্ত্রণ করে এসেছেন। তাই হয়তো, পাঠা বলি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়নি।
তাঁর দাবি, সকাল সাড়ে এগারটায় মন্দিরে বলি শুরু হয়েছে। বারটা নাগাদ একটি পাঠা বলি দেওয়ার সময় বিঘ্ন ঘটেছে। তবে, তার আগে এবং পরে বলি দিতে কোন রকম বিঘ্ন ঘটেনি। আজ মন্দিরে সর্বমোট ৬০টি পাঠা বলি দেওয়া হয়েছে। পুরোহিত প্রসেনজিত চক্রবর্তীর বক্তব্য, ১৯৯০ সাল থেকে মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে পুজোর সাথে যুক্ত রয়েছি। এমন ঘটনা আগে ঘটলেও, আজ সবচেয়ে বেশি বার চেষ্টার পর বলি সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, আজকের ঘটনার প্রেক্ষিতে পশুপ্রেমীরা আওয়াজ তুলেছেন, মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে বলি প্রথা বন্ধ হোক। ইতিপূর্বেও বলি বন্ধের চেষ্টা হয়েছিল এবং তাতে ত্রিপুরা হাইকোর্টের আদেশে বলি বন্ধ ছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলি প্রথা পুণরায় চালু হয়েছে। তবে, উন্মুক্তভাবে বলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বলি দেওয়ার ঘর চারিদিকে ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

