জলপাইগুড়িতে কাঁধে মৃতদেহ বহন কাণ্ডে গ্রেফতার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক

জলপাইগুড়ি, ১১ জানুয়ারি (হি. স.) : স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে তুলে স্বামী হেঁটেছিলেন। কয়েক মিটার হাঁটার পরেই জলপাইগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের শববাহী গাড়িতে মৃতদেহ তুলে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যথেষ্টই বিতর্ক তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠে। এমনকি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এরপরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানার তরফে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের ডাক পড়ে। মঙ্গলবার সকালে ওই ব্যক্তিকে জলপাইগুড়ি থানায় আসতে দেখা যায়। গতকাল রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তরফে পাঁচ সদস্যের তৈরি করা তদন্ত রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে। যদিও রিপোর্টে কী রয়েছে সেই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনই কিছু বলতে চাইছে না। তবে রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ কল্যাণ খান বলেন, তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। আমি রিপোর্টটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। সেইসঙ্গে রিপোর্টের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলব।

প্রসঙ্গত গত বুধবার জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের সুপারস্পেশালিটি বিভাগে ক্রান্তির বাসিন্দা লক্ষ্মীরানি দেওয়ান মারা যান। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবারের তরফে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় এক বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অতিরিক্ত অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া দাবি করা হয়। যেটা পরিবারের তরফে যথেষ্টই ব্যয়বহুল বলে দাবি করা হয়। পরবর্তীতে ওই মহিলার মৃতদেহ কাঁধে তুলেই স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান এবং ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ান হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে ৫০ মিটার দূরত্ব যেতেই জলপাইগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেখানে হাজির হয়ে যায়। এরপর তাদের শববাহী গাড়িতে লক্ষ্মীরানির মৃতদেহ তুলে ক্রান্তির বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হইচই পড়ে। অ্যাম্বুল্যান্স সংগঠনের তরফে ঘটনাস্থলে হাজির হওয়া ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদকের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ে করা হয়েছে।অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ নোটিশ করে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসকে ডেকে পাঠায়। অঙ্কুর মঙ্গলবার সকালে কোতোয়ালি থানায় হাজির হন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁকে সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে জিজ্ঞসাবাদ করা হয়। অঙ্কুরকে রাত পর্যন্ত থানায় বসে থাকতে দেখা যায়। পরে জানা যায়, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *