পূর্বোত্তর দ্বিতীয় অলিম্পিক গেমসে অ্যাথলেটিক্সে সাফল্য ত্রিপুরার রিয়া-র

ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ নভেম্বর।। স্বপ্ন পূরণ হলো ‘‌নূন আনতে পান্থা ফুরোয়’ পরিবারের মেয়ে রিয়া দেবনাথ। শিলঙের সাই মাঠের ট্র‌্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে রীতিমতো ঝড় তুলে পূর্বোত্তরের সেরা অ্যাথলেটের সম্মান পাওয়া রিয়া মাত্র ৮ মাস ধরে নিয়েমিত অনুশীলন করছে ড:‌ বি আর আম্বেদকর কোচিং সেন্টারে। ২০০ মিটার দৌড়ে সকলকে পেছনে ফেলে ২৬.‌৭২ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরার সম্মান আদায় করে গাড়ি চালক গৌতম এবং গৃহিনী করুণা দেবনাথের দুই মেয়ের ছোট রিয়া। আর ওর ওই সাফল্যে গর্বিত কোচ রাজেশ মজুমদার সহ সেন্টারের অন্যাণ্য কর্তারা। হেনরি ডিরিজিও আকাদেমির নবম শ্রেণীর ছাত্রী রিয়া শুধু ২০০ মিটার দৌড়ে নয় ৪x‌১০০ মিটার রিলেতেও রৌপ্য পদক জয় করে।আড়ালিয়ার গোপি পাড়ার ওই প্রতিভাবান অ্যাথলিটটি ছোটবেলায় প্রতি নিয়ত ওই সেন্টারে এসে অনুশীলন করতো। মাঝে বেশ কয়েকবছর ছিলো মাঠের বাইরে। কোচ রাজেশ মজুমদারের ওই সেন্টারের দায়িত্ব পাওয়ার পর ৮ মাস আগে আবার ফিরে মাঠে। এরপরই রাজেশ ঘষে মেজে তৈরী করেন ওই সোনার মেয়েকে।‌ রাজ্যস্তরে সাফল্য পেলেও এবারই প্রথম পূর্বোত্তর আসরে সাফল্য পেলো সেয। এখন লক্ষ্য জাতীয় আসরেও সাফল্য পাওয়া। তা মাথায় রেখেই ১৯ নভেম্বর রাজ্যে ফিরে অনুশীলনে মেতে উঠবে সে। শিলঙ থেকে টেলিফোনে এখবর জানায় খোদ রিয়া। খুশি ওর কোচ রাজেশ। বলেন,”রিয়ার এটা জন্মগত প্রতিভা। নতুবা মাত্র ৮ মাসে কেউ এমন সাফল্য পায়নি। এবারের সাফল্য রিয়াকে অনেক উজ্জ্বীবিত করবে। যা আগামীদিনে জাতীয় আসরে আরও ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করবে”। ক্রীড়া দপ্তর থেকে বিভিন্ন সেন্টার খোলার পর থেকেই ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্য আসতে থাকে। রাজেশ মনে করেন,”ত্রিপুরার প্রতিভার অভাব নেই। সঠিক সময়ে ক্রীড়াদপ্তর বিভিন্ন সেন্টার খুলেছে। এরই সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। যা বজায় থাকবে আগামীদিনেও”। শুধু রিয়া নয়, ওই সেন্টারের বেশ কয়েকজন অ্যাথলিট এবারের আসরে সাফল্য পেয়েছে। মোট ৮ জন অ্যাথলিট ওই সেন্টার থেকে ত্রিপুরাকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবার। এরমধ্যে ৫ জনই ট্র‌্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে রীতিমতো ঝড় তুলে পদক জয় করেছে। তাদের মধ্যে দ্বীপশিখা সূত্রধর ১০০ মিটার,৪x‌১০০ মিটার রিলেতে রৌপ্য পদক, ২০০ মিটার এবং ৪x ‌৪ মিক্সডে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে। এছাড়া অনিকেত শীল ৪০০ মিটারে ব্রোঞ্জ,‌‌৪x ‌৪ মিক্সডে  রৌপ্য, পুরবি দাস ৪x‌১০০ মিটার রিলেতে রৌপ্য, এবং প্রদীপ ভৌমিক ৪x‌১০০ মিটার রিলেতে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন। শিলঙ থেকে ফিরে আসার পর অ্যাথলিটদের সংবর্ধনা দেওয়ারও পরিকল্পনা নিচ্ছেন সেন্টারের কর্তারা।  এদিকে পদক জয় করে বুধবার টেবিল টেনিস খেলোয়াড়রা রাজ্যে ফেরার কথা ছিলো। কিন্তু বিমান বিভ্রাটে এদিন আসা হয়নি শ্রেয়শী চক্রবর্তীদের। আজ সকালে রাজ্যে আসার কথা। আসরে টেবিল টেনিসে শ্রেয়শী রৌপ্য, জিশান চৌধুরি ব্রোঞ্জ এবং বালিকাদের দলগত বিভাগে ত্রিপুরা ব্রোঞ্জ পদক জয় করে। এদিকে মহিলাদের কুমিতি ইভেন্টে ত্রিপুরার দ্বীপশিখা চক্রবর্তী ব্রোঞ্জ, ক্যারাটে ইভেন্ট থেকে ত্রিপুরা ১ টি ব্রোঞ্জ পদক পায়। ত্রিপুরা ৪ টি স্বর্ণ,১১ টি রৌপ্য এবং ২৬ টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *