লোয়াইরপোয়া (অসম), ১০ নভেম্বর (হি.স.) : বার্মিজ সুপারির অবৈধ বাণিজ্য রোখা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্থানীয় সুপারি বিক্রি করতে বাধা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। অভিযোগ স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ী এবং কৃষকদের। এই অভিযোগ তুলে করিমগঞ্জের লোয়াইরপোয়া ব্লকের জনতা প্রশাসনিক সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে স্থানীয় সুপারি স্থানীয় বাজারে বিনা বাধায় বিক্রির দাবিতে এক প্রতিবাদী সভা করেছেন।
লোয়াইরপোয়া ব্লকের অসম-ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তের বালিপিপলা গ্রাম পঞ্চায়েত (জিপি) কার্যালয় প্রাঙ্গণে বুধবার বিকালে স্থানীয় প্রায় দেড় শতাধিক কৃষক স্থানীয় সুপারি ক্রয়-বিক্রয়ে সরকারের উদাসীনতা ও প্রশাসনের ব্যর্থ ভূমিকার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ সাব্য়স্ত করেন।
প্রতিবাদকারী মতিলাল দাস, জ্যোর্তিময় দাস, শঙ্কর চন্দরা বলেন, নিজেদের বাড়ি এবং বাগানে উৎপাদিত সুপারি যথাসময়ে বিক্ৰি করতে পারছেন না তাঁরা। ফলে স্থানীয় কৃষকরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন। অথচ এক শ্রেণির দালাল চক্র নিজেদের মৃগয়া চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে !
আক্ষেপ ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের তাঁরা আরও বলেন, সুপারি বিক্রি নিয়ে সরকার ও প্রশাসন শীঘ্রই আন্তরিক না-হলে এলাকার ভুক্তভোগী জনতা গণতান্ত্রিক উপায়ে বৃহত্তর গণ-আন্দোলনের ডাক দিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সাব্য়স্ত করবেন। এতে দায়ী থাকবে প্রশাসন।
মতিলাল দাসরা বলেন, করোনা-কাঁটায় গ্রামাঞ্চল ও চা বাগানের মানুষের আর্থিক অবস্থা এমনিতেই বেহাল। তাছাড়া প্রত্যন্ত এই অঞ্চলের সিংহভাগ মানুষই কৃষিজীবী। ফলে সুপারি বাগান, ধান চাষ করে এলাকার মানুষ পরিবার প্রতিপালন করে আসছেন। কিন্তু গত প্রায় তিন বছর ধরে তাঁরা নানা কারণে যথাসময়ে ন্যায্য দামে নিজের বাড়ি ও বাগানে উৎপাদিত সুপারি বিক্ৰি করতে পারছেন না। পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে পাইকাররাও স্থানীয় সুপারি কিনতে চাইছেন না। বার্মিজ ও বহিঃরাজ্যের সুপারি বাজেয়াপ্ত এবং তদন্তের নামে স্থানীয়দের অকারণে হয়রানি করা হচ্ছে। স্থানীয় সুপারি বিক্রি নিয়ে জেলাশাসক আন্তরিক হলেও এসওপি-র নামে পুলিশ সুপার খড়গহস্ত। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রামীণ কৃষকদের।
তাঁরা এও বলেন, বহিঃরাজ্যের সুপারি আটকানোর জন্য প্রয়োজনে সীমান্ত এলাকায় পুলিশ চেকগেট বসানো হোক। তবুও স্থানীয় সুপারি বিক্রিতে যাতে কোনও বাধা না হয় সে ব্যাপারে তাঁরা সরকারকে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখে স্থানীয় জনগণকে স্থানীয়ভাবে স্থানীয় সুপারি বিক্রির পথ সুগম করে দিতে তাঁরা জেলাশাসক, সার্কল অফিসার এবং সর্বোপরি রাজ্যের মুখ্মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাঁরা জানান, আগামী দুদিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে করিমগঞ্জ জেলা সদরে গিয়ে জেলাশাসকের সাথে দেখা করবেন।
প্রতিবাদী সভায় অন্যান্য় বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মীরা হালাম, মুনভাঙির হালাম, নির্মল দাস, নারায়ণ দাস, চন্দনকুমার দাস, রঞ্জিত দাস, সুব্রত দাস, রথীন্দ্র চড়াই, জগদীশ দাস, লব দাস প্রমুখ বহুজন।

