হুগলি, ১৭ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : সপরিবারে দেবী দুর্গা। অথচ কোনও কোনও অসুর নেই। মা অভয়া রূপে দুর্গা পূজিত হন সাগরলাল দত্তর বাড়িতে। তাঁর নামেই রয়েছে কামারহাটির বিখ্যাত হাসপাতাল।
হুগলি জেলার চুঁচুড়ার দত্ত বাড়িতে দুই হাত বিশিষ্ট দুর্গা ‘এক হাতে আশীর্বাদ করেন, এক হাতে দান করেন’ এই বিশ্বাস দত্ত বাড়ির সদস্যদের। প্রায় দুশো বছর হতে চলা এই পুজোতে আজও ভিড় জমান স্থানীয় মানুষজন। সাগর দত্তের নামে ট্রাস্টি থেকে দত্ত বাড়ির এই পুজোর রক্ষনাবেক্ষণ হয়। এই ট্রাস্টি সাগর দত্তের বাড়ির দেখাশোনাও করে। রথের দিন দত্ত বাড়িতে কাঠামো পুজো হয়। চক্ষুদান হয় মহালয়ার আগের দিন। আর মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় মা অভয়ার পুজো।
১৮৬২ সালে ব্যবসায়ী সাগরলাল দত্ত এই পুজো শুরু করেন। সাগরলাল দত্ত, বর্তমানে যাঁর নামে হাসপাতাল রয়েছে। তিনি বেশিরভাগ সময় ব্যবসার কাজে কলকাতায় থাকতেন। কিন্তু চুঁচুঁড়ার বাড়িতে তাঁর স্ত্রী জহরমনি দাসী থাকতেন। কথিত আছে, এক সন্ন্যাসী দত্ত বাড়িতে এসেছিলেন একদা। সেই সন্ন্যাসীকে জহরমনি দেবী খুব সেবা-যত্ন করেন। বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে সন্ন্যাসী একটি অষ্টধাতুর অভয়া মূর্তি হাতে দিয়ে যান সাগরলালের স্ত্রীর। এরপর সেই মূর্তি দিয়ে পুজো শুরু হয় চুঁচুড়া দত্ত বাড়িতে।
মা অভয়া কেমন রূপে পূজিত হন? দত্তবাড়ির এক সদস্য রাজকুমার দত্ত জানান, দেবী দশভূজার দশ হাতের বদলে এখানে থাকে দু-হাত। দেবীর দু-হাতে থাকে না কোনও অস্ত্রও। এমনকি অসুরও থাকে না। মা অভয়া রূপে পুজিত হন দুর্গা। দুটি সিংহ মায়ের বাহন। বৈষ্ণব মতে, পুজো হয় তাই দত্ত বাড়ির পুজোয় কোন বলি হয় না বলেও তিনি জানান। একদা স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর, অষ্টধাতুর অভয়া মূর্তিকে মা দুর্গা রূপে পুজো করা শুরু হয়।