শিলচর (অসম), ৩ জুলাই (হি.স.) : পুলিশের গুলিতে খতম কুখ্যাত দুই ডাকাত কাছাড় জেলার কমরুল ইসলাম ওরফে লাকই মিয়াঁ (২৩) এবং আবুল হুসেন বড়ভুইয়াঁ (২২)। আজ রবিবার ভোররাতে মেঘালয়ের সোনাপুরে পুলিশের হেফাজত থেকে পালানো চেষ্টা করেছিল তারা। তখন তাদের রুখতে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ।
শিলচরে কাছাড়ের পুলিশ সুপার ড. রমণদীপ কৌর জানান, গতকাল সকালে গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী জোড়াবাটে ডাকাতির অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছিল। এদের সঙ্গে আরও এক ডাকাত আনোয়ার হুসেন লস্কর (২২)-কেও আটক করেছিল জোড়াবাট পুলিশ। তারা তেলের ট্যাংকার চালকের বেশে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে কাছাড় জেলার শিলচর ও সংলগ্ন গ্রামাঞ্চল এবং রাজপথে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্ৰাসরাজ কায়েম করে ডাকাতি করত। অতিসম্প্রতি বন্যাক্রান্ত শিলচর শহরে কয়েকটি ডাকাতির সঙ্গেও এরা সরাসরি জড়িত।
পুলিশ সুপার কৌর জানান, কমরুল ইসলাম (লাকই) বরাক উপত্যকার একজন মোস্ট ওয়ান্টেড অপরাধী। তার বিরুদ্ধে কাছাড়ের কয়েকটি থানায় ছিনতাই, অপহরণ, ডাকাতির মামলা রয়েছে। তিনি জানান, গতকালই শিলচর সদর থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের দল দুটি গাড়িতে করে তিন অভিযুক্তকে নিয়ে জোড়াবাট থেকে শিলচরে আসছিল। কিন্তু গভীর রাতে সোনাপুর গেটের কাছে এসে গাড়িগুলি যখন ধীর গতিতে চলে, তখন লাকই এবং আবু গাড়ি থেকে পালানো চেষ্টা করে। এসপি রমণদীপ বলেন, পালাতে বাধা দিতে তাদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি চালালে উভয়েই গুলিবিদ্ধ হয়। প্রথমে তাদের কালাইন পিএইচসি (প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার)-তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (এসএমসিএইচ)-এ রেফার করেন। এসএমসিএইচ-এ কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি জানান, আরেক অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বড়ভুইয়াঁ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
ড. রমণদীপ কৌর আরও জানান, গত ৩০ জুন শিলচর শহরে রঙ্গিরখাড়ি এলাকায় সম্পত্তি বিবাদকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির এক ঘটনায় শিলচর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশ তদন্ত শুরু করলে ঘটনার সঙ্গে ট্যাংকার চালক আবুল হুসেন বড়ভুইয়াঁকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে সে ট্যাংকার নিয়ে মেঘালয়ের দিকে রওয়ানা হয়েছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শিলচরের ওসির নেতৃত্বে পুলিশের দল তাকে ধরতে পিছু ধাওয়া করে। কিন্তু ধস এবং যানজটের ফলে পুলিশের দল সেখান থেকে ফিরে আসে। ইত্যবসরে তার যাত্রাপথে মেঘালয় এবং অসমের সব থানাকে তাকে পাকড়াও করতে সূচনা দেন পুলিশ সুপার। সে অনুযায়ী গতকাল সকালে জোড়াবাট পুলিশ দুটি ট্যাংকার সহ একজনের জায়গায় তিন অপরাধীকে আটক করেছিল।
প্রসঙ্গত, এনকাউন্টারে নিহত দুজেনেরই বাড়ি কাছাড় জেলার সোনাই থানা এলাকায়। কমরুল ইসলাম ওরফে লাকই মিয়াঁর বাড়ি সৈদপুর গ্রামে এবং আবুল হুসেন বড়ভুইয়াঁর বাড়ি কৃষ্ণপুর গ্রামে।