জেলমুক্ত রাজীব গান্ধী হত্যা মামলার দোষী সাব্যস্ত এজি পেরারিভালন

নয়াদিল্লি, ১৮ মে (হি. স.) : রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় জেল থেকে মুক্তি পেল দোষী সাব্যস্ত এজি পেরারিভালন। ৩১ বছর পর বুধবার তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তামিলনাড়ু সরকার তাঁর মুক্তির জন্য আগেই আবেদন জানিয়েছিল। এদিন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ছিল শুনানি। সেখানেই শীর্ষ আদালতের তরফে তাকে মুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানানো হয়েছে, এই মামলায় অনুচ্ছেদ ১৪২ প্রয়োগ করে দোষীকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।

রাজীব গান্ধী হত্যার সময় ১৯ বছর বয়স ছিল পেরারিভালনের। জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলামের সদস্য তথা রাজীব হত্যার অন্যতম চক্রী শ্রীবাসনের জন্য দু’টি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি কেনার অভিযোগ উঠেছিল পেরারিভালনের বিরুদ্ধে। সেই ব্যাটারিই বিস্ফোরণ ঘটানোর কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল। পেরারিভালনের গ্রেফতারির পর ১৯৯৮ সালে সন্ত্রাস দমন আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিয়েছিল। ১৯৯৯ সালে সেই সাজাই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত । তবে ২০১৪ সালে তা বদলে যাবজ্জীবন করা হয়। চলতি বছর মার্চে এই দোষীর জামিন মঞ্জুর করা হয়। পেরারিভালন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। তিনি নিজের স্থায়ী জেলমুক্তির আবেদনে লিখেছিলেন, ‘আমি ৩১ বছর ধরে জেলে বন্দি অবস্থায় রয়েছি। তাই আমায় এ বার রেহাই দেওয়া হোক।’ ২০০৮ সালে তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভা তাঁর মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার সেই সিদ্ধান্তকে রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠান। তখন থেকেই পেরারিভালনের মুক্তি-মামলা থমকে আছে। সুপ্রিম কোর্ট গত ১০ মে এই মামলার শুনানি শেষ করে রায় স্থগিত রাখে।

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, বিষয়টি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উপর ছাড়েন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল। কিন্তু এ ব্যাপারে অনেকটা সময় কেটে গেলেও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি রাষ্ট্রপতি। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। জানানো হয়, তামিলনাড়ু সরকার চায় রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষীসাব্যস্ত সাত জনকেই ১৬১ ধারায় ক্ষমা করা হোক। তাই রাজ্যপাল রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য। ফলে রাষ্ট্রপতির মতামতের জন্য অপেক্ষা করা অপ্রয়োজনীয়। এরপরই এদিন পেরারিভালনকে জেলমুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি এ-ও জানিয়ে দেয়, রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য সেই রাজ্যের রাজ্যপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *