আগরতলা, ২৯ মার্চ (হি. স.) : সমাজ শিক্ষিত হলে তবেই শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে। কারণ, শিশুদের অপরাধের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার ক্ষমতা নেই। দেশের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশের অধিকারি শিশুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হোক চাইছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন(এনসিপিসিআর)। আজ মঙ্গলবার মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সাংবাদিকদের নিয়ে আঞ্চলিক স্তরের কর্মশালায় এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত চর্চা হয়েছে। তাতে, বিভিন্ন সমস্যা, আইন এবং সমাধানের পথ খুজে বের করার বিষয়গুলি প্রাধান্য পেয়েছে। শুধু তাই নয়, জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন সমাজ সচেতনতায় সংবাদ মাধ্যমের সহযোগীতা চেয়েছে।
মেঘালয় রাজ্য শিশু কমিশন ও সেবা ভারতী পূর্বাঞ্চলের সহযোগিতায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন ওই কর্মশালার আয়োজন করেছে। ওই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র টেকনিকেল এক্সপার্ট পরেশ শাহ, মেঘালয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন আই এম সিয়েম, মেঘালয় সমাজ কল্যাণ দফতরের অধিকর্তা ড. ডি ডি শিরা, সেবা ভারতী পূর্বাঞ্চলের সভাপতি রমেন শর্মা, ত্রিপুরা রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যা শর্মিলা চৌধুরী, মেঘালয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্য ইয়ামুন লালু এবং মেঘালয় সমাজ কল্যাণ দফতরের ডিসিপিও এম এল ওয়ারজড়ি। কর্মশালায় উপস্থিত সকলেই শিশুদের সুরক্ষার স্বার্থে সংবাদ মাধ্যমের সহযোগীতা চেয়েছে।
এদিন কর্মশালায় মেঘালয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন আই এম সিয়েম বলেন, যুগ যুগ ধরে শিশুরা নিজেদের উপর অপরাধের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার ক্ষমতা দেখাতে পারে না। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, জীবজন্তুদের সুরক্ষা অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। অথচ, শিশুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি শিশুদের জন্য নিরাপদ স্থান চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের ভয়হীন জীবনের প্রত্যাশা করেছেন।
জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র টেকনিকেল এক্সপার্ট পরেশ শাহ বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ শিশু। তাদের সুরক্ষায় দেশে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন হয়েছে। সেই সমস্ত আইনের সহায়তায় শিশুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। শাহ শিশুদের সম্পর্কিত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় আইন সম্পর্কে আরও আলোকপাত করেছেন এবং সেগুলি হল- শিশু অধিকার সুরক্ষা আইন, ২০০৫; জুভেনাইল জাস্টিস (শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৫ এবং কিশোর বিচার (শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা) মডেল বিধিমালা, ২০১৬; যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা (পকসো) আইন, ২০১২; শিশুদের বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার (আরটিই) আইন, ২০০৯; তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০; ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি), ১৮৬০; বাল্য বিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইন, ২০০৬; শিশু ও কিশোর শ্রম (নিষেধ এবং নিয়ন্ত্রণ) আইন, ১৯৮৬; এবং প্রি-কনসেপশন এবং প্রি-ন্যাটাল ডায়াগনস্টিক টেকনিকস অ্যাক্ট, ১৯৯৪।
এদিন সেবা ভারতী পূর্বাঞ্চলের সভাপতি রমেন শর্মা বলেন, সামাজিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন খুবই জরুরী। কারণ, সমাজ শিক্ষিত হলেই শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাঁর মতে, সমাজ সচেতন হলে সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করা যাবে। এদিকে, আজ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা শিশুদের সুরক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে ধরেছেন।