কলকাতা, ১৯ ডিসেম্বর (হি. স.) : রবিবার পুরভোট নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দুর নেতৃত্বাধীন বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসেই শুভেন্দু হুমকির সুরে বলেন, ‘ছাপ্পা ভোট, বুথ জ্যাম, সিসিটিভি কাগজ গিয়ে মুড়িয়ে দেওয়ার ১৫০ থেকে ২০০টি ফুটেজ আমার কাছে রয়েছে। আগামী ২৩ তারিখ পুরো নথি সহ এই সব তুলে দেব।’ একই সঙ্গে তিনি ফের পুরসভা ভোটের দাবিও তুলেছেন।
আজ, রবিবার সল্টলেকে নিজের বাড়িয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা আটকে ছিলেন শুভেন্দু। সেই ক্ষোভও উগড়ে তিনি। অভিযোগ করে বলেন, ‘এই রাজ্যে ন্যূনতম গণতন্ত্র নেই। ভোট লুট হয়েছে। কলকাতার ২০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। বাকিটা ছাপ্পা-রিগিং। নির্বাচন কমিশন তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।’ তৃণমূলের বহিরাগত ইস্যু তুলে আক্রমণ করতে পিছপা হননি বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, ‘এর আগে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীদের বহিরাগত বলেছিল তৃণমূল। আজ, রাজ্যের মানুষদেরও বলছে। আসলে ভোট লুট করার জন্যই এসব তৃণমূলের কৌশল।’
শুভেন্দুর অভিযোগ, কলকাতা পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে শাসকলদল পুরভোটকে প্রহসনের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। রাজ্যপালকেও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া ভোট দিতে যেতে হয়েছে। গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ পেয়েছি। শুভেন্দুর কথায়, ‘বাংলায় কীভাবে ভোট লুট হয়, সেটা মানুষ আজ দেখলেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে পুরো বিষয়টা তুলে ধরব। তথ্যপ্রমাণ সহ হাই কোর্টে পেশ করব।’ এর পরই গোটা পুরভোটের পুনর্নির্বাচন চেয়ে কমিশনে দরবার করার কথাও জানান শুভেন্দু।
এ দিন স্বাভাবিক ভাবেই শুভেন্দুর নিশানায় নিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর বেলা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মিত্র ইন্সটিটিউশনে ভোট দেওয়ার পর আশ্বাস দিয়েছিলেন, কোনও অশান্তিতে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা প্রমাণ সহ তা দেখাতে পারলেই কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। অভিষেকের সেই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, পুরো বিষয়টাই ওদের নেতৃত্বে হয়েছে। মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে ওরা।
এর আগে এদিন টুইট করে নির্বাচন কমিশনকে তোপ দাগলেন বিরোধী দলনেতা। তিনি অভিযোগ তোলেন, ‘কমবেশি ১০০টি ওয়ার্ডে ভোট লুট করেছে তৃণমূল।’ শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশও সমানভাবে অপরাধী বলে মনে করেন তিনি।
রবিবার টুইটে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল প্রতিটি বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। কিন্তু, বসানো হলেও সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।’ শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘এইভাবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। আপনি হয়তো বলতেই পারেন কোর্টের নির্দেশ মেনে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। তবে সেগুলি কাজ করছে কি করছে না কে তা দেখতে যাচ্ছে!
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোট লুট করেছে তৃণমূল।’ শুধু রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই নয়, কলকাতা পুলিশকেও সমানভাবে অপরাধী বলে মনে করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকেই ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ড। ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে বহু বুথে। এজেন্টদের বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘কমবেশি ১০০টি ওয়ার্ডে ভোট লুট করেছে তৃণমূল।’
শুভেন্দুর পাশাপাশি বুথের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ রাখা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। নিজের টুইট পোস্টে তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘বহু বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা স্টিকার দিয়ে আটকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’ এ নিয়ে একটি ভিডিয়ো তিনি টুইটারে পোস্ট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে স্টিকার আটকে দিচ্ছেন। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস।-

