নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যে শিক্ষায় বেসরকারীকরণের অভিযোগ তুলল সিপিএম৷ এই অভিযোগ এনে রাজ্য সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে বামপন্থীরা৷ সিপিএম রাজ্য কমিটির তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজ্যের বিজেপি-আই পি এফ টি জোট সরকারও ধীরে ধীরে এক একটি করে সরকারী দপ্তর এবং তার পরিষেবা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেবার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ এই কোপ পড়েছে এখন শিক্ষা দপ্তরের উপর৷ পলিসি টু রেগুলেট এন্ড এনকারেজ প্রাইভেট পার্টিসিপেশন ইন সুকল এডুকেশন ইন ত্রিপুরা নামে গত ২রা ডিসেম্বর জারী করা বিজ্ঞপ্তির দ্বারা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
সিপিএমের দাবি, সরকারের এই উদ্যোগ সফল হলে রাজ্যের নিম্ন আয়ের ঘরের ছেলে-মেয়েরা বিশেষ করে জনজাতি, তপঃ জাতি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ সমাজে বৈষম্য আরো বাড়বে৷ রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আরো সংকোচিত হবে৷ তার কুফল হবে সুদূর প্রসারী৷ সি পি আই (এম) এই উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করছে৷
সরকার শিক্ষা দপ্তরে বিদ্যজ্যোতি সুকলস আন্ডার মিশন ১০০ নামে আরেকটি প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে৷ এই প্রকল্পটিও চরম বৈষম্য সৃষ্টিকারী৷ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বঞ্চিত করে শহরের ছেলে-মেয়েদের সুযোগ প্রদানের চেষ্টা৷ এই প্রকল্পটি কার্যকরী হলে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দু’’টি শ্রেণী তৈরী হবে একটি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত অন্যটি অগ্রাধিকারহীন৷ একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের ভূমিকা কখনও এরকম হওয়া উচিত নয়৷ সি পি আই (এম) এই সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করছে৷ সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছে রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়কে সমান দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করার জন্য এবং এখন শিক্ষক স্বল্পতা ও অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোর জন্য যে অচলাবস্থা চলছে তা নিরসনে যেন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়৷
রাজ্য সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে অগ্ণি নির্বাপক দপ্তরের কর্মচারীদের সমিতি করার অধিকার থাকবে না৷ এই ঘোষণা চরম স্বৈরাচারী নীতির নামান্তর এবং সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক৷ বিগত কয়েক দশক ধরে এই দপ্তরের কর্মচারীরা সমিতি করা তথা ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ভোগ করার জন্য কর্মসংসৃকতির কোন ক্ষতি হয়নি বরঞ্চ তারা আরো দক্ষতা এবং আন্তরিকতার সাথে জনসেবায় ব্রতী হবার সুযোগ পেয়েছেন৷ সিপি আই (এম) এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য দাবী জানাচ্ছে৷
৮১ আগরতলা-সাক্রম জাতীয় সড়কে উদয়পুরে গোমতী নদীর উপর নেতাজী সুভাষ সেতুর পাশে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণকল্পে পুরোনো এলাইনম্যান্ট পরিবর্তন করতে গিয়ে রাজ্য সরকার গত ১০ই ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে পুলিশ পল্টন ব্যবহার করে একটি অতিপ্রাচীন ধর্মীয় স্থান ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছে৷ এতে সমস্ত অংশের ধর্মপ্রাণ মানুষ আহত হয়েছেন৷ সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেই ভালো হত৷ পুরোনো এলাইনম্যা র উপর সেতু নির্মাণ হলে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে হতনা এবং বেশী পরিবারকেও উচ্ছেদ করার প্রয়োজন হতনা৷ বোঝাপড়া এবং অরো কম ক্ষতিপূরণ প্রদানের মধ্য দিয়েই অপেক্ষাকৃত কম খরচে এবং সহজ এলাইনম্যান্টে সেতুটি নির্মাণ করা যেত৷

