নালকাটা এলাকা এপি-সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ ডিসেম্বর: ধলাই জেলার নালকাটার আঞ্চলিক বিদেশী শূকর প্রজনন কেন্দ্রে অস্বাভাবিক মৃত শূকরগুলির দেহে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার-এর জীবানু পাওয়া গেছে। তাই নালকাটাকে এই সংক্রামক রোগের এপি-সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করে ত্রিপুরা সরকারের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এপি-সেন্টারের ১ কিমির মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলিকে ‘ইনফেক্টেড জোন’ এবং ১০ কিমি-র মধ্যে অবস্থিত সমস্ত গ্রামগুলিকে ‘সার্ভেলেন্স জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব ‘ইনফেক্টেড বা সংক্রামিত জোন’ এর জন্য যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তা হচ্ছে ১) সংক্রমিত এলাকার সমস্ত শূকর মানব চালিত পদ্ধতিতে ধ্বংস করা হবে, মাটিতে পুঁতে ফেলে বা আগুণে পুড়ে ফেলে। ২) এই এলাকা থেকে কোন জীবিত শুকর বা শুকরের খাদ্য কিংবা শুকরের মাংস বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না বা বাইরে থেকে এখানে আনা যাবে না। ৩) কোন মালবাহী বা প্রাণীবাহী গাড়ি এখান থেকে কোন শুকর বহন করে বাইরে নিয়ে যেতে পারবে না বা বাইরে থেকে এখানে আনতে পারবে না। ৪) তবে গাড়ি বা রেলের মাধ্যমে অন্য জায়গা থেকে সংক্রামিত এলাকার মধ্য দিয়ে প্রাণী (শূকর) পরিবহণ করা যাবে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্যানিটেশন সার্টিফিকেট দেখিয়ে। ৫) আফ্রিকান সোয়াইন ফিভারে আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে কোন শূকর জীবিত বা মৃত অবস্থায় সেটিকে অন্য কোথাও সরানো যাবে না। ৬) আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার-এর সংক্রমণ হলে বা সংক্রমিত হয়েছে বলে সন্দেহ হলে সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে আসা কোন প্রাণীর (শূকর) খাদ্য, বাসস্থানের জিনিসপত্র, মৃতদেহ, চামড়া ইত্যাদি পরিবহণ করা যাবে না। ৭) কোন ব্যক্তি বা সংস্থা সংক্রমিত এলাকায় প্রাণীর বাজার, মেলা, প্রদর্শনী ইত্যাদির আয়োজন করতে পারবে না যেখানে একাধিক প্রাণীর জমায়েত হবে। তবে প্রাণী চিকিৎসক জনস্বার্থে চাইলে কোন আবেদনের ভিত্তিতে বা তার প্রয়োজন মনে করলে শূকর ছাড়া অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে সেব্যাপারে কিছুটা ছাড় দিতে পারে। ৮) কোন ব্যক্তি কোন বাজারে, মেলায়, প্রদর্শনীতে বা জন সমাগমে কোন সংক্রামিত বা সংক্রমণের সন্দেহ থাকলে সেরকম প্রাণীকে আনতে পারবে না। ৯) এক্ষেত্রে প্রাণী চিকিৎসককে তার দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবেন পুর/পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন, রাজস্ব ও কৃষি দপ্তরের আধিকারিকগণ। ১০) সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এমন প্রাণীর দেহ বা কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যদি কেউ নদী-নালা বা জলাশয়ে ফেলে দেয় কিংবা ফেলার আদেশ/ অনুমোদন দেয় তাহলে সেই ব্যক্তিকে প্রাণীর সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধক আইন-২০০৯ এ অপরাধী বলে বিবেচনা করা হবে এবং তার জেল বা জরিমানা কিংবা উভয় হতে পারে। ১১) উক্ত আইনে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা তথা অন্যান্য আধিকারিকগণ তাদের ক্ষমতাবলে দায়িত্ব পালনের সময় তাদেরকে এই কাজের জন্য নিযুক্ত সরকারি কর্মচারি বলে গণ্য করা হবে।

তেমনি ‘সার্ভেলেন্স জোন’ এর জন্য বলা হয়েছে- ১) সংক্রমিত জোন-এর জন্য ধার্য্য সমস্ত নিষেধাজ্ঞা এখানেও বলবৎ হবে, শুধুমাত্র এক্ষেত্রে ১০নং নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। ২) এই জোন-এর সমস্ত পশুকে নজরদারির আওতায় রাখা হবে। ক্লিনিক্যাল, ভিরোলোজিক্যাল এবং সেরোলোজিক্যাল নজরদারিতে রাখা হবে এদের। ৩) যে সমস্ত শূকর বন এলাকার কাছাকাছি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি থাকবে সংশ্লিষ্ট বন আধিকারিকের সাথে পরামর্শক্রমে।

Leave a Reply