নয়াদিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর : গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও জীবিকা সুরক্ষায় বড় সংস্কারের পথে কেন্দ্র সরকার। বৃহস্পতিবার লোকসভায় ‘বিকশিত ভারত – গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন বিল, ২০২৫’ পেশ করলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তবে বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করে সংসদে আপত্তি তোলে একাধিক বিরোধী দল।
নতুন এই বিল কার্যকর হলে ২০ বছর পুরনো মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট, ২০০৫ (এমজিএনরেগা) বাতিল হয়ে যাবে। প্রস্তাবিত আইনে ‘বিকসিত ভারত ২০৪৭’-এর লক্ষ্য অনুযায়ী একটি আধুনিক আইনগত কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। এর আওতায় গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা স্বেচ্ছায় অদক্ষ শ্রমে অংশ নিলে বছরে সর্বাধিক ১২৫ দিনের মজুরি ভিত্তিক কাজের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।
সরকারি সূত্রের দাবি, এই বিলটি এমজিএনরেগার তুলনায় একটি বড় সংস্কার। পুরনো আইনের কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা, পরিকল্পনা ও জবাবদিহি আরও জোরদার করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উৎপাদনশীল সম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করা, আয় বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক ও আর্থিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে গ্রামীণ সমাজকে আরও সহনশীল করে তোলাই এর মূল উদ্দেশ্য।
বিলের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সামাজিক সুরক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ডিজিটাল পরিকাঠামো এবং গ্রামীণ জীবিকার বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই পরিবর্তিত বাস্তবতায় পুরনো এমজিএনরেগা কাঠামো আর বর্তমান গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে পুরোপুরি মানানসই নয় বলেই সরকারের দাবি।
নতুন বিলের আওতায় চারটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলি হল— জল সংক্রান্ত কাজের মাধ্যমে জল সুরক্ষা, মূল গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন, জীবিকা-সংক্রান্ত পরিকাঠামো গঠন এবং চরম আবহাওয়া মোকাবিলায় বিশেষ প্রকল্প। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, তেমনই দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই গ্রামীণ পরিকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সরকারি মহলের মতে, এই নতুন আইনের ফলে শ্রমিকরা বেশি সংখ্যক নিশ্চিত কর্মদিবস, উন্নত মজুরি, শক্তিশালী সুরক্ষা এবং আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর বাস্তবায়ন ব্যবস্থার সুবিধা পাবেন। তবে বিরোধীদের আপত্তির মুখে বিলটি নিয়ে সংসদে বিস্তৃত বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

