মুনাম্বাম, ১৩ ডিসেম্বর : কেরালার মুনাম্বাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে এনডিএ একটি ঐতিহাসিক জয় অর্জন করেছে, যা দীর্ঘদিনের একটি বিতর্কিত জমি নিয়ে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। মুনাম্বাম এলাকায় প্রায় ৫০০ খ্রিষ্টান পরিবার ওয়াকফ বোর্ডের অবৈধ দাবি থেকে তাদের জমি রক্ষার জন্য এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ করে আসছে।
কেরালা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অনুপ আন্তোনি জোসেফ এই জয়কে “ঐতিহাসিক” বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেন, “মোদী সরকার ও বিজেপি মুনাম্বাম এলাকার মানুষদের ওয়াকফের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন দিয়েছে, এবং তারা এখন বিজেপিকে তাদের ম্যান্ডেট হিসেবে বেছে নিয়েছে,”—জোসেফ টুইট করেছেন।
আগের নির্বাচনে এই ওয়ার্ডটি কংগ্রেসের হাতে ছিল। তবে, বিজেপির এই জয়ের ফলে ২০২৬ সালের কেরালা বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে এমন একটি রাজ্যে যেখানে বিজেপি এখনও তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
মুনাম্বাম, যা কেরালার এর্নাকুলাম জেলায় অবস্থিত, ওয়াকফ বোর্ডের কাছ থেকে ৪০৪ একর জমির দাবি ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ২০১৯ সালের পর। এতে প্রায় ৫০০ খ্রিষ্টান পরিবার বসবাস করে, যারা দীর্ঘদিন ধরে ওয়াকফ বোর্ডের জমির ওপর দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। মুনাম্বাম ল্যান্ড প্রোটেকশন কাউন্সিলের ব্যানারে এসব পরিবার প্রায় ৪০০ দিন ধরে বিক্ষোভ চালাচ্ছে, তাদের জমি রক্ষা ও রাজস্ব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে।
এর আগে, কেরালা হাইকোর্টে এই জমির ওয়াকফ সত্ত্বা অস্বীকার করে একটি রায় দেওয়া হয়েছিল, যা বিক্ষোভকারীদের জন্য একটি বড় জয় ছিল। তবে, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে এবং জমির স্টেটাস কোয়ের আদেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস এমপি শশী থারুরের প্রতিনিধিত্ব করা থিরুভানন্তপুরম কর্পোরেশনে বিজেপি শীর্ষে রয়েছে।
মুনাম্বাম এলাকায় জমি সংক্রান্ত এই বিতর্কে কেরালা ওয়াকফ বোর্ডের দাবি ছিল যে ৪০৪ একর জমি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু স্থানীয় খ্রিষ্টান পরিবারগুলো তাদের জমি থেকে উৎখাতের শঙ্কায় বছরের পর বছর বিক্ষোভ করে চলেছে। এই পরিস্থিতি গত বছর কেরালা সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর আরও জটিল হয়ে উঠেছে, যা ওয়াকফ সম্পত্তি পরিচালনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা বৃদ্ধি করেছে।
শুরুর দিকে, এই পরিবারগুলো স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে প্রত্যাখ্যান করেছিল, তবে পরে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এখন, মুনাম্বাম এলাকায় বিজেপির এই জয় কেবল রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণই নয়, এই ফলাফলটি জমি সংক্রান্ত চলমান বিতর্কে নতুন দিক নির্দেশনা দিতে পারে।

