আগরতলা, ৬ ডিসেম্বর: বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিভাজন করে সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতি কোনদিন ফলপ্রসূ হবে না। জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার। আজ সিমনা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন বড়কাঠাল বাজারে আয়োজিত এক সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
সিমনা মন্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত এই যোগদান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, কিছুদিন আগে বলা হয়েছে যে ভারতীয় জনতা পার্টির মতো জাতীয় পার্টিকে এডিসি এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রায়শই হুমকি ধমকি আমরা শুনি। তাই আমি একটা কথাই বলছি যে যত হুমকি ধমকি দেওয়া হবে ততো বেশি আমরা শক্তিশালী হবো। আমি যা শুনেছি এখানে অর্থাৎ বড়কাঠাল বাজারে নাকি কোন কার্যক্রম করতে দেওয়া হবে না, মুখ্যমন্ত্রীকে আসতে দেবে না, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রীকে আসতে দেবে না, ভারতীয় জনতা পার্টির কাউকে আসতে দেবে না। কিন্তু এই জায়গা কারোর নিজস্ব সম্পত্তি নয়। এই সম্পত্তি সবার। যেকোন পার্টি যেকোন জায়গায় যেতে পারে। কিন্তু গায়ের জোরে ভয় দেখিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা ভারতীয় জনতা পার্টি কখনো বরদাস্ত করবে না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অখন্ডতা রক্ষার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরে প্রাণ বলিদান দিয়েছিলেন ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। পণ্ডিত দীন দয়ালকেও মোঘলসরাইয়ে খুন করা হয়েছিল। সারা ভারতবর্ষের মধ্যে একটা শ্রেষ্ঠ পার্টি ভারতীয় জনতা পার্টি। আঞ্চলিক পার্টির সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। যারা যে পার্টি করে তারা করবে। কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বা নানাভাবে বিভাজন করে সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে যে রাজনীতি কোনদিন ফলপ্রসূ হবে না। বিগত দিনগুলিতেও এভাবে চলে এসেছে। এতে কোনদিন উন্নয়ন সম্ভব হবে না। তাই আমি এখনো বলবো যারা এধরণের চিন্তাভাবনা করেন, যারা ভুল বুঝিয়ে অন্যভাবে প্ররোচিত করছে তাদের জন্য এখনো ভারতীয় জনতা পার্টির দরজা খোলা আছে। আমি তাদের সকলকে ভারতীয় জনতা পার্টির পতাকা তলে সামিল হওয়ার আহ্বান করছি। কারণ ভারতীয় জনতা পার্টির গ্রাফ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।
সভায় বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আগে অনেকে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে গিয়েছিল। বিশেষ করে জনজাতি অংশের কিছু মানুষ। কারণ তারা বুঝতে পারছিল না যে তাদের প্রকৃত অভিভাবক কে? নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কিছু ব্যক্তি তাদের ভুলপথে পরিচালিত করেছে। আজ উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১১/১২টি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এখনো চেষ্টা চলছে দেশকে কিভাবে দুর্বল করা যায়। সেভাবে রাজ্যকেও দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে। আর বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য এখন ত্রিপুরায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা প্রয়াস, সবকা বিশ্বাসের পার্টি হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আমাদের ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার জনজাতি অংশের মানুষের কিভাবে আরো উন্নয়ন করা যায় সেই দিশায় কাজ করছে। কিন্তু এসবের মধ্যেও অনেকে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐকান্তিক প্রয়াসে রাজ্যের জনজাতি অংশের ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে পরপর পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয়েছে। যেটা আগে কোনদিন শুনা যায় নি। ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সুযোগ্য সন্তান জিষ্ণু দেববর্মাকে তেলেঙ্গানার মতো বড় রাজ্যের রাজ্যপাল করা হয়েছে। আমাদের সরকার আসার পর আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার মহারাজ বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের নামে আগরতলা এয়ারপোর্ট উৎসর্গ করা হয়েছে। সংগ্রঙমা পুজোর দিনটিকে রেস্ট্রিক্টেড হলিডে হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গড়িয়া পুজোতে একদিন থেকে বাড়িয়ে দুদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

