নয়াদিল্লি, ৩ ডিসেম্বর : দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও বাবরি মসজিদ সম্পর্কিত মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার ‘সরদার সভা’, ভাদোদরায় বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, “নেহরু বাবরি মসজিদ নির্মাণে সরকারি তহবিল ব্যবহার করার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল তা প্রতিরোধ করেছিলেন।”
এই দাবিকে কংগ্রেস তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। দলের একজন মুখপাত্র এবং সংসদ সদস্য মানিকম টাগোর বলেন, “এ ধরনের বক্তব্যের কোনও আর্কাইভ বা দলিলভিত্তিক প্রমাণ নেই। নেহরুজি স্পষ্টভাবে সরকারি তহবিল ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতেন। তিনি সবসময় জোর দিয়েছিলেন, ধর্মীয় স্থান পুনর্নির্মাণের জন্য জনগণের দান ব্যবহৃত হোক, সরকারী তহবিল নয়।”
টাগোর আরও উল্লেখ করেন, “যদি নেহরুজি কোটি কোটি মানুষের কাছে সম্মানিত সোমনাথ মন্দিরের পুনর্নির্মাণেও সরকারি তহবিল ব্যবহার করতে অস্বীকার করেছিলেন, তাহলে বাবরি মসজিদের জন্য কেন ব্যবহার করবেন? ইতিহাস এবং যৌক্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন।”
তিনি রাজনাথের বক্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসাবেই দেখছেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠাতাদের মানহানি করা হচ্ছে, নতুন গল্প বানানো হচ্ছে এবং সমাজে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা নেহরু ও প্যাটেলের উত্তরাধিকারকে বিকৃত হতে দেব না। এটি গোঁড়া রাজনীতির অংশ।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যে আরও বলা হয়, “সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণের সময় সরকারি তহবিল ব্যবহার করা হয়নি। সেখানে ৩০ লাখ টাকা জনগণ দান করেছিলেন, একটি ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছিল, এবং এক পয়সাও সরকারি তহবিল থেকে যায়নি। আয়োধ্যার রাম মন্দিরও সরকারের তহবিল থেকে নয়, সম্পূর্ণ ব্যয় জনগণের দ্বারা বহন করা হয়েছে।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বিতর্ক ইতিহাসের পুনর্লিখন ও বর্তমান রাজনীতিকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

