কলকাতা, ৩১ অক্টোবর: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনা কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক যৌথ তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।
সূত্র অনুযায়ী, এই প্রস্তাবটি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের তরফে তোলা হয়েছে। তাঁদের মত, প্রতিটি ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য পৃথক তদারকি কমিটি গঠিত হলে তাতে থাকবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন অফিস , পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
সিইও অফিসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রস্তাবটির মূল উদ্দেশ্য হলো সার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখা, কারণ ইতিমধ্যেই কিছু রাজনৈতিক দল এই তালিকা সংশোধনের পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ ও আশঙ্কাপ্রকাশ করেছে। নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরীণ সূত্রের মতে, কমিশন এই প্রস্তাবে যৌক্তিকতা খুঁজে পেয়েছে, কারণ এতে করে তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত বিতর্ক বা অসন্তোষ আগেভাগেই এড়ানো সম্ভব হবে।
এই সপ্তাহের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন ১২টি রাজ্যে, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে, বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়া-এর ঘোষণা করেছে। তিন ধাপে সম্পন্ন হওয়া এই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ শুরু হবে ৪ নভেম্বর থেকে। এদিকে, মুখ্য নির্বাচন দফতরের কঠোর সতর্কবার্তার পর অবশেষে রাজ্যের ১৪৩ জন ‘অনিচ্ছুক’ বুথ-লেভেল অফিসার বৃহস্পতিবারের মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন।
সিইও দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, যারা এখন পর্যন্ত নিয়োগপত্র সংগ্রহ করেননি, তারাও সময়সীমার মধ্যে এসে দায়িত্ব নিয়েছেন। সতর্কবার্তা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। সিইও দফতর নির্দেশ দেয়, সকল বিএলও-কে দুপুরের মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দফতর বিএলও-দের জানায়, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা রয়েছে প্রয়োজনে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে, যাতে দায়িত্বে গাফিলতি বা অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত বিএলও বা নির্বাচনী কর্মীদের সাময়িক বরখাস্ত করা যায় এবং প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা যায়।
সিইও দফতরের অভ্যন্তরীণ সূত্রের দাবি, একদিকে কিছু সরকারি কর্মী বিএলও হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, অন্যদিকে কয়েকজন সরকারি কর্মচারী অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের বিএলও হিসেবে নির্বাচিত করা হয়নি। কয়েকজন এমনকি মুখ্য নির্বাচনী দফতরে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা সারপ্রক্রিয়ার অংশ হতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু নির্বাচিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ, জানান সিইও দফতরের এক কর্মকর্তা।
নির্বাচন কমিশন এখন বিএলও-দের অংশগ্রহণ ও বিধানসভা ভিত্তিক তদারকি কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত মূল্যায়ন করছে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

