পাটনা, ২৫ অক্টোবর : নির্বাচনের আগে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কড়া অবস্থান নিল বিহার পুলিশ। জাতিভিত্তিক উসকানিমূলক গান ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানালেন রাজ্যের পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) বিনয় কুমার।
তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। কেউ যদি জাতিগত উত্তেজনা সৃষ্টি করার মতো আপত্তিকর বা দ্ব্যর্থবোধক গান, বিশেষত ভোজপুরি গান, শেয়ার করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডিজিপি জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ার নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা মিলে কমিশনের নির্দেশ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছে।
উল্লেখ্য, ২৪৩ সদস্যের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে দুটি পর্যায়ে ভোট গ্রহণ হবে—৬ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর। ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, সোশ্যাল মিডিয়া রাজনৈতিক প্রচারের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি প্ল্যাটফর্মে জাতিভিত্তিক বার্তা ছড়াতে গান ও ‘রিল’ পোস্ট করছেন। বহুক্ষেত্রে এসব পোস্টে দ্ব্যর্থবোধক ও উত্তেজনামূলক ভোজপুরি গানের ব্যবহার করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখার সাইবার সেল এ পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনায় ১০টি এফআইআর দায়ের করেছে। এছাড়া ৫৩টি স্টেশন ডায়েরি এন্ট্রি করা হয়েছে এবং প্রায় ১৬টি আপত্তিকর পোস্ট মুছে ফেলা হয়েছে, বলে জানিয়েছে পুলিশ। আরও বহু অভিযোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সিনথেটিক কনটেন্টের দায়িত্বশীল ব্যবহারের বিষয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।
কমিশনের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, “সিনথেটিক বা এআই-সৃষ্ট তথ্য ব্যবহার ও প্রচার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গভীর হুমকি। এই ধরনের কনটেন্ট সত্যের মুখোশ পরে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে পারে, যা নির্বাচনী সততা ও জনবিশ্বাসের জন্য বিপজ্জনক।”
কমিশন রাজনৈতিক দলগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে তারা যেন আইটি নিয়মাবলী, 2021 এবং কমিশনের পূর্ববর্তী সব নির্দেশিকা ও পরামর্শ যথাযথভাবে মেনে চলে।
বিহার পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনের এই দ্বিমুখী সতর্কতা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভোটের আগে জাতিগত বিভাজন বা প্রযুক্তি-ভিত্তিক ভুয়ো প্রচার কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।

