নয়াদিল্লি, ১৮ অক্টোবর : বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল শনিবার বলেন, বিশ্বব্যাপী আর্থিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভারতের অর্থনীতি অভাবনীয় স্থিতিশীলতা ও গতি দেখাচ্ছে। তিনি জানান, সরকারের আর্থিক ও মৌদ্রিক নীতিমালা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
ধনতেরস উপলক্ষে নয়াদিল্লিতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গোয়েল। তিনি বলেন, “একটি অস্থির ও চ্যালেঞ্জিং আন্তর্জাতিক পরিবেশেও ভারতের অগ্রগতি এতটাই দ্রুত যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পর্যন্ত ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করে ৬.৬ শতাংশে উন্নীত করেছে।”
গোয়েল জানান, “জিএসটি সংস্কারের পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন হওয়ার আগেই শুরু হয়েছিল। ফলে আমদানি শুল্ক বা ট্যারিফ যুদ্ধের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।”তিনি বলেন, “চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আমরা ৭.৮ শতাংশের ঐতিহাসিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করেছি।”
অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, “অর্থ মন্ত্রণালয়, রিজার্ভ ব্যাংক এবং ফিসকাল-মৌদ্রিক নীতিমালার সমন্বয়ে ধারাবাহিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে ভারতের ওপর মুদ্রাস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।”
তিনি জানান, “গত মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল মাত্র ১.৫ শতাংশ— যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন। এছাড়াও ১৭ থেকে ১৮ বছর পর প্রথমবার ভারতের রেটিং উন্নীত করেছে এস অ্যান্ড পি ।”
পীযূষ গোয়েল বলেন, “অর্থনৈতিক শক্তির প্রতিফলন ঘটছে ভোক্তা চাহিদায়। শুধুমাত্র নবরাত্রির প্রথম আট দিনে মারুতি সুজুকি ১,৬৫,০০০টি গাড়ি বিক্রি করেছে, যা একটি রেকর্ড।”
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, “জিএসটি হ্রাস যদি ট্যারিফ যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া হত, তবে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকের দিনই আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছিলাম যে এটি বহুদিন ধরেই পরিকল্পনার মধ্যে ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “কে বা কখন কল্পনা করেছিল এমন এক ট্যারিফ যুদ্ধের? একাধিক মন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত গ্রুপ প্রায় দেড় বছর ধরে এই বিষয়ে কাজ করেছে। বিভিন্ন সময়ে নানা স্তরে আলোচনা হয়েছে। কাজেই এটা ট্যারিফ যুদ্ধের ফল নয়, বরং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ।”
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “এই বছর ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্মার্টফোন রপ্তানিতে তার প্রতিবেশী দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। এটি ভারতের জন্য এক বিশাল অর্জন। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনেক প্রযুক্তি কোম্পানির প্রায় ২০ শতাংশ উৎপাদন এখন ভারতে হচ্ছে।”
এই সম্মেলনে মন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি, নীতিগত স্থিরতা এবং উৎপাদন খাতে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন।

