‘অনুপ্রবেশের কারণেই মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি’: অসমে বললেন অমিত শাহ

নয়াদিল্লি/গৌহাটি, ১১ অক্টোবর : অসমে মুসলিম জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকেই দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার দিল্লিতে দৈনিক জাগরণ-এর প্রাক্তন সম্পাদক নরেন্দ্র মোহনের স্মরণে আয়োজিত এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, অসমে মুসলিম জনসংখ্যার দশকভিত্তিক বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৬ শতাংশ। অনুপ্রবেশ ছাড়া এটি সম্ভব নয়।” তিনি দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী একাধিক জেলায় এই বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশেরও বেশি, কোথাও কোথাও তা ৭০ শতাংশে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যায়, অতীতে ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে।

অমিত শাহ বলেন, অনুপ্রবেশ কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের প্রশ্ন। তাঁর দাবি, “কিছু রাজনৈতিক দল এই অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাংক হিসেবে দেখছে এবং তাঁদের আশ্রয় দিচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার একা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারে না। রাজ্য সরকারগুলিকেও দায়িত্ব নিতে হবে।” সীমান্তে কাঁটাতার না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু এলাকার ভূগোল এমন যে সেখানে বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়, ফলে অনুপ্রবেশ আটকাতে আরও কঠোর নজরদারি ও প্রশাসনিক সক্রিয়তা প্রয়োজন।

শাহ প্রশ্ন তোলেন, “গুজরাট এবং রাজস্থানেও তো ভারতের সীমান্ত রয়েছে, কিন্তু সেখানে অনুপ্রবেশ হয় না কেন?” এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চান যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী জনসংখ্যার হ্রাসও অনুপ্রবেশজনিত সমস্যার প্রভাব। “বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের জন্যই এই জনমিতিক পরিবর্তন ঘটছে,” মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, যারা শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে পার্থক্য বোঝে না, তারা নিজেদের আত্মার প্রতারক। এদিকে, বিরোধী দলগুলোর দাবি, দেশের সীমান্ত রক্ষার দায়ভার বিএসএফ-এর উপর, যা সরাসরি কেন্দ্রের অধীনে। তাই অনুপ্রবেশ রোখার দায় কেন্দ্র এড়াতে পারে না।

শাহের এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে অনুপ্রবেশ ও জনসংখ্যা পরিবর্তনের প্রসঙ্গ এনে সরকার রাজনৈতিক মেরুকরণের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলিও।