নয়াদিল্লি, ৬ অক্টোবর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে নয়াদিল্লির দ্বারকার যশোभूमি কনভেনশন সেন্টারে ‘ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (আইএমসি) ২০২৫’-এর উদ্বোধন করবেন। এশিয়ার বৃহত্তম প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মেলাগুলোর অন্যতম এই আয়োজনের মাধ্যমে শুরু হবে ভারতের ডিজিটাল ভবিষ্যতের নতুন অধ্যায়।
অনুষ্ঠানের আগের দিন, সোমবার, কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য এম. সিন্ধিয়া যশোভূমি কনভেনশন সেন্টার পরিদর্শন করে প্রস্তুতির চূড়ান্ত অবস্থা পর্যালোচনা করেন। তিনি শিবাজি স্টেডিয়াম থেকে বিমানবন্দর মেট্রো হয়ে যশোभूमিতে পৌঁছে টেকসই ও কার্যকর সংযোগ ব্যবস্থার প্রতি সরকারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সিন্ধিয়া প্রদর্শনী এলাকা ঘুরে দেখেন, স্টার্টআপ ও প্রদর্শকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগ (ডিওটি), সেলুলার অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিওএআই) ও অংশীদার সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “টেলিযোগাযোগ এখন এমন এক মহাসড়ক, যার মাধ্যমে ৫জি, এআই, এমএল, আইওটি এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের মতো প্রযুক্তিগুলো শুধু ভারতকেই নয়, ভারতকে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে ভারত আত্মনির্ভর, উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আইএমসি ২০২৫ সেই অগ্রযাত্রারই প্রতিফলন।”
আইএমসি ২০২৫-এ অংশ নেবে প্রায় ১.৫ লক্ষ দর্শক, ৭,০০০ প্রতিনিধি এবং ১৫০টিরও বেশি দেশের অংশগ্রহণকারী। ৪.৫ লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে থাকছে ৪০০টি প্রদর্শনী স্টল। সিন্ধিয়ার ভাষায়, “ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস এখন আর কেবল জাতীয় নয়, এটি এক বৈশ্বিক প্রযুক্তি কংগ্রেসে পরিণত হয়েছে, যা এশিয়ার ডিজিটাল নেতৃত্বে ভারতের অবস্থানকে তুলে ধরছে।”
এ বছর আইএমসি ২০২৫-এ থাকছে ছয়টি প্রধান আন্তর্জাতিক সম্মেলন — ইন্টারন্যাশনাল ভারত ৬জি সিম্পোজিয়াম, যা ‘ভারত ৬জি অ্যালায়েন্স’-এর মাধ্যমে ভারতের নেতৃত্বাধীন পরবর্তী প্রজন্মের গবেষণাকে প্রদর্শন করবে; ইন্টারন্যাশনাল এআই সামিট, যা যোগাযোগ নেটওয়ার্কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রূপান্তরমূলক ভূমিকা তুলে ধরবে; এবং সাইবার সিকিউরিটি সামিট, যা ১.২ বিলিয়ন ভারতীয় টেলিকম ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা জোরদার করবে। এছাড়া স্যাটকম সামিট-এ স্যাটেলাইটভিত্তিক যোগাযোগের নতুন যুগ নিয়ে আলোচনা হবে।
একইসঙ্গে আইএমসি অ্যাসপায়ার প্রোগ্রাম-এ প্রায় ৫০০টি স্টার্টআপ ও ৩০০ জন ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট, বিনিয়োগকারী এবং শিল্পনেতা একত্র হবেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে গ্লোবাল স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ – ইন্ডিয়া এডিশন, যেখানে ১৫ জন ফাইনালিস্ট ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ সুযোগের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সিন্ধিয়া বলেন, “এই আয়োজনগুলো মিলে আইএমসি ২০২৫-কে এক বৈশ্বিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও বিনিয়োগের সংমিশ্রণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে — যা ভারতের টেলিকম ও ডিজিটাল সাফল্যের প্রকৃত প্রতিচ্ছবি।”
তিনি আরও জানান, ভারত এখন বিশ্বের শীর্ষ তিনটি ডিজিটাল জাতির একটি, যেখানে রয়েছে ১.২ বিলিয়ন মোবাইল গ্রাহক, ৯৭০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং মাত্র ২২ মাসে বিশ্বের দ্রুততম ৫জি রোলআউট সম্পন্ন করার নজির।
“আমাদের শক্তি হলো — ‘ডিজাইন ইন ইন্ডিয়া, সলভ ইন ইন্ডিয়া, অ্যান্ড স্কেল ইন ইন্ডিয়া।’ আইএমসি ২০২৫ এই আত্মনির্ভর প্রযুক্তি অভিযাত্রারই উদযাপন,” বলেন তিনি।
যোগাযোগমন্ত্রী আরও যোগ করেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারতের টেলিকম খাত উদ্ভাবন, সংযোগ ও অন্তর্ভুক্তির এক আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে। আইএমসি ২০২৫ হবে সেই রূপান্তরমূলক ডিজিটাল ভারতের বিশ্বদরবারে এক গর্বিত প্রদর্শন।”
