বাঁসওয়াড়ায় ১.২২ লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, পারমাণবিক শক্তি থেকে আদিবাসী কল্যাণে নজর

নয়াদিল্লি, ২৫ সেপ্টেম্বর : আজ রাজস্থানের বাঁসওয়াড়া জেলায় ১.২২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর মধ্যে অন্যতম হল ৪২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা মাহী বাঁসওয়াড়া পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প। মাহি বাঁধের কাছে নাপলা এলাকায় অবস্থিত এই প্রকল্পে ৭০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি নিউক্লিয়ার ইউনিট গড়ে তোলা হবে।

শুধু পরমাণু শক্তিই নয়, সৌরশক্তি, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পরিকাঠামো এবং জাতীয় সড়ক সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন তিনি। কয়েক হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে রাজস্থানে তিনটি নতুন রেল পরিষেবার সূচনা। অনুষ্ঠানে এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী, যেখানে তিনি সরকারের সাম্প্রতিক জিএসটি সংস্কার নিয়ে কথা বলেন এবং দাবি করেন, এই সংস্কারের ফলে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমেছে এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর খরচ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বিরোধীদের বিরুদ্ধে জিএসটি নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন এবং বলেন, এই সংস্কার সমাজের প্রতিটি স্তরের উপকারে আসবে। একই সঙ্গে তিনি আত্মনির্ভর ভারতের পক্ষে জোর সওয়াল করে দেশবাসীকে দেশীয় পণ্যের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, “স্বদেশি মানে ভারতের মাটিতে, ভারতের ঘামে তৈরি পণ্য। এটা কেবল পছন্দের বিষয় নয়, এটা গর্বের বিষয় হওয়া উচিত।”

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, রাজস্থানের জন্য আজকের দিনটি ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করল, কারণ ভারতের শক্তি খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আজ একসঙ্গে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার শক্তি প্রকল্প শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, “আজ ভারতের উন্নয়নের গতি বিদ্যুতের গতির সমান এবং প্রতিটি অঞ্চল এই উন্নয়নে অবদান রাখছে।”

তিনি আরও বলেন, আগে বিদ্যুৎ খাত উপেক্ষিত থাকলেও, গত এক দশকে এই খাতে নজিরবিহীন অগ্রগতি হয়েছে। সৌর শক্তি থেকে পরমাণু শক্তির পথে এগিয়ে চলা ভারত এখন পরিষ্কার শক্তিকে একটি গণআন্দোলনে পরিণত করছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে আদিবাসী সমাজের কল্যাণ ও উন্নয়নের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন এবং বলেন, কংগ্রেস সরকার আদিবাসীদের বরাবর অবহেলা করেছে, যেখানে বিজেপি সরকার আদিবাসীদের মর্যাদা, ক্ষমতায়ন এবং সংস্কৃতির সুরক্ষার জন্য ক্রমাগত কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধুই পরিকাঠামো নয়, সমাজের সব অংশকে শক্তিশালী করে একটি বিকশিত ভারত গড়ে তোলা।”

এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে রাজস্থানে যেমন উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, তেমনই ভারতের শক্তি নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।