২০২৫ সালের বাস্তবতা প্রতিফলিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের পক্ষে জোরালো সমর্থন, ভারতের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিল জাতিসংঘ

নিউ ইয়র্ক, ২৩ সেপ্টেম্বর : জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের পক্ষে জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন। সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফেন ডুজারিক বলেন, “২০২৫ সালের বিশ্বকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো নিরাপত্তা পরিষদের প্রয়োজন আছে, ১৯৪৫ সালের নয়।” এই প্রেক্ষাপটে তিনি ভারতের নেতৃত্ব ও বহুপাক্ষিকতায় ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।

ডুজারিক বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার এই বছরের অন্যতম মূল প্রতিপাদ্য। আমাদের লক্ষ্য একটি আরও দক্ষ, প্রতিনিধিত্বমূলক এবং কার্যকর জাতিসংঘ গঠন করা, যেটি ২০২৫ সালের বৈশ্বিক বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করবে। ভারত বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার দৃঢ় সমর্থক এবং জাতিসংঘে তার উপস্থিতি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও বলেন, কোন দেশগুলি নতুন স্থায়ী সদস্য হবে, তা নির্ধারণ করবেন সদস্য রাষ্ট্ররাই। “এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ মহাসচিব নেবেন না। এটি সদস্য রাষ্ট্রদের সম্মিলিত আলোচনার বিষয়,” বলেন ডুজারিক।

গত বছর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর রাজ্যসভায় বলেছিলেন, নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারিত সংস্করণে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ নিশ্চিত করাই দেশের ‘শীর্ষ অগ্রাধিকার’। তিনি বলেছিলেন, “আধুনিক বৈশ্বিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারকৃত ও সম্প্রসারিত নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য হিসেবে ভারতের সবরকম যোগ্যতা আছে।”

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাড়তে থাকা শুল্ক ও রক্ষণশীল নীতির প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মুখপাত্র বলেন, “ট্যারিফ ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা উদ্বেগজনক। বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতি, উন্নয়ন এবং ভারতের মতো দেশের ওপরও।”

এই বছরের ইউএনজিএ অধিবেশন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী, জলবায়ু সম্পর্কিত ‘জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষা সামিট’, এবং নারী অধিকারে ‘বেইজিং ঘোষণা’-এর ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।

বিশ্বজুড়ে পরিবর্তিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায় নিরাপত্তা পরিষদের গঠনগত সংস্কার এখন সময়ের দাবি। ভারত দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার, এবং আন্তর্জাতিক মহলেও এই দাবি এখন জোরালো সমর্থন পাচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মন্তব্য সেই প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।