আগরতলা, ২৩ সেপ্টেম্বর : উদয়পুরে নবরূপে সজ্জিত মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজপরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে মঙ্গলবার ত্রিপুরা বিধানসভায় শাসক জোট শরিক তিপরা মথা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজপরিবারের কোনও সদস্য আমন্ত্রিত না হওয়ায় প্রশ্ন তোলেন তিপরা মথার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই। তিনি জানতে চান, “এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রাজপরিবারের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি কেন?”
এর জবাবে পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, “রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহার নির্দেশে তৈরি অতিথি তালিকায় রাজপরিবারের সদস্যসহ তিনজন সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে প্রধানমন্ত্রী দফতর একটি সংশোধিত তালিকা পাঠায়, যেখানে পূর্ব ত্রিপুরার সাংসদ তথা রাজপরিবারের সদস্য কৃতি দেবী দেববর্মা এবং তিপরা মথার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মার নাম রাখা হয়।”
মন্ত্রী চৌধুরী আরও বলেন, “এখানে অবহেলার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। রাজ্য সরকার রাজপরিবারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সবরকম চেষ্টা করেছে।”
পরে এই বিষয়ে আলোচনা করেন তিপরা মথার বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা, কংগ্রেস বিধায়ক বিরজিত সিনহা, মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা, মন্ত্রী রতনলাল নাথ এবং মুখ্যমন্ত্রী নিজেও।
বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা জানান, “২২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মার সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। তিনি রাজ্যের বাইরে ছিলেন এবং জানিয়েছেন, কোনও আমন্ত্রণপত্র পাননি। এমনকি রাজমাতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।”
এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ পরিষ্কার করেন, “এমবিবি বিমানবন্দর, পালাটানা ও মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য একটি বিশদ তালিকা প্রস্তুত করেছিল রাজ্য সরকার। তবে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র পূজা অর্চনা ও মন্দিরের উদ্বোধন করতেই এসেছিলেন, কোনও ভাষণ বা জনসভা ছিল না। ফলে সাউথ ব্লক তাদের প্রটোকল অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা ঠিক করে দেয়।”
এদিকে, কংগ্রেস বিধায়ক বিরজিত সিনহা প্রশ্ন তোলেন, “বিরোধী বিধায়কদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি কেন? এই মন্দির কি শুধুই শাসক দলের জন্য?”
শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কেবলমাত্র মা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে পূজা দিতে এসেছিলেন। যদি তাঁর কোনও জনসভা থাকত, তাহলে নিঃসন্দেহে সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হতো।”

