কাঠমান্ডু, ১৯ সেপ্টেম্বর: নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি শুক্রবার জেন-জেড আন্দোলনের প্রথম দিনে (৮ সেপ্টেম্বর) ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী ঘটনায় মুখ খুললেন। তিনি দাবি করেন, আন্দোলনে ব্যবহৃত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র পুলিশের হাতে ছিল না এবং সরকার কখনোই বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়নি।
ওলি বলেন, “যে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি চালানো হয়েছে, তা পুলিশের হাতে ছিল না—এই বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ৮ সেপ্টেম্বরের ওই সহিংসতায় ১৯ জন যুবক নিহত হন। ওলি দাবি করেন, বিক্ষোভে গোপন ষড়যন্ত্রকারীরা অনুপ্রবেশ করে হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যার ফলেই এতগুলি প্রাণহানি ঘটেছে।
নেপাল পুলিশ জানিয়েছে, জেন-জেড আন্দোলনকেন্দ্রিক ঘটনাবলীতে মোট ৭২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই ভাটভাটেনি সুপারমার্কেটে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রাণ হারান।
ওলি বলেন, “সিংহ দরবার (সরকারের প্রশাসনিক কেন্দ্র), সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট সহ বিচার বিভাগীয় ভবন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের অফিস এবং নেতাদের বাড়ি—সবই ছিল পরিকল্পিত হামলার লক্ষ্যবস্তু।”
উল্লেখ্য, বিক্ষোভকারীদের হাতে ওলির নিজ বাসভবন (ভক্তপুরের বালকোট এলাকায় অবস্থিত) গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা, পুষ্পকমল দাহাল (প্রচণ্ড) ও ঝালানাথ খানালের বাড়িগুলিও হামলার শিকার হয়।
ওলি এরপর নিরাপত্তার কারণে নেপাল সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা গ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার তিনি সেই নিরাপত্তা ত্যাগ করে ভক্তপুর জেলার গুন্ডু এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে চলে যান।
প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ওলি বহু বিতর্কের মুখে পড়েন। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, তাঁর নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতির খোলসেই ঢেকে গিয়েছিল এবং বাস্তবে অবনমনের পথে থাকলেও ওলি সবসময় ‘সমৃদ্ধ নেপালের’ ভুয়া ছবি তুলে ধরেছেন।
ওলির পদত্যাগের পর দেশের হাল ধরেছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে গঠিত একটি অরাজনৈতিক সরকার। এই সরকারের মূল দায়িত্ব আগামী ৬ মাসের মধ্যে সংসদীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা। আগামী হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচনের দিন ধার্য হয়েছে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ।

