নয়াদিল্লি, ১৯ সেপ্টেম্বর: হিমাচল প্রদেশের কিন্নৌর জেলায় শুক্রবার গভীর রাতে (রাত ১২:১০ নাগাদ) এক মারাত্মক ক্লাউডব্রাস্টের (মেঘভাঙা বৃষ্টি) ফলে ব্যাপক বন্যা ও ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে। থাচ গ্রামে হঠাৎ তিনটি পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি জলধারায় জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় এই বিপর্যয় ঘটে। প্রচণ্ড জলের তোড়ে দু’টি গাড়ি ভেসে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষের জমি, ফলের বাগান ও বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হঠাৎ বন্যার জলে গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পাশের জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যান। ভেসে যাওয়া গাড়িগুলির মধ্যে প্রভীন মোইয়ান এবং হরি বিশ্টের মালিকানাধীন গাড়ি ছিল। মাস্তান গ্রামে একটি গরুর শেড এবং কয়েকটি ঘরের অংশ ভেসে যায়।
রনবীর নামক এক গ্রামবাসীর ঘর সহ আরও তিনটি বাড়ি ধ্বংসের মুখে বলে জানা গিয়েছে। বেশ কয়েকটি ফলবাগান সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী শিমলায় এডওয়ার্ড স্কুলের কাছে ধস নামায় বন্ধ হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ ‘সার্কুলার রোড’। কুমারসেইনের কারেভাথি এলাকায় তিনতলা একটি বাড়ি ধসে পড়ে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে টানা বৃষ্টিপাত জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এই বর্ষা মরসুমে হিমাচলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনো পর্যন্ত ৪২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
১৭ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ সপ্তাহের শুরুতেই, রাজ্যের বিভিন্ন অংশে আকস্মিক বন্যা ও ধসের ফলে ৪ জনের মৃত্যু এবং ৬ জন নিখোঁজ হন। রাজ্যজুড়ে ৬৫০-র বেশি রাস্তা, যার মধ্যে তিনটি জাতীয় সড়কও রয়েছে, তা অবরুদ্ধ রয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ ও পানীয় জল সরবরাহ।
মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু হিমাচলকে “দুর্যোগ-আক্রান্ত রাজ্য” বলে ঘোষণা করেছেন। গত তিন বছরে রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ₹২০,০০০ কোটিরও বেশি। কেন্দ্র সরকারের কাছে জরুরি আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন প্যাকেজ চাওয়া হয়েছে।
মাত্র কয়েক দিন আগেই মান্ডি জেলার ধর্মপুরে ক্লাউডব্রাস্টে কয়েকটি এইচআরটিসি বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি এবং বহু ঘরবাড়ি ও দোকান ভেসে গিয়েছিল। সোন নালা উপচে পড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, দৃশ্যপট ছিল ২০১৫-র বন্যার থেকেও ভয়াবহ।

