ডিব্রুগড়, ৮ সেপ্টেম্বর: ভারতের ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ অথরিটি (আইডব্লিউএআই), বন্দর, শিপিং ও ওয়াটারওয়েজ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে, ডঃ ভূপেন হাজারিকার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ‘বিস্তির্ণ পারৰে: সাদিয়া থেকে ধুবড়ি পর্যন্ত একটি সঙ্গীতময় যাত্রা’ শুরু করতে যাচ্ছে। সোমবার গুইজন, ডিব্রুগড় থেকে যাত্রাটি শুরু হবে।
ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে এই সাংস্কৃতিক যাত্রা চলবে চারটি পর্যায়ে। ডিব্রুগড়ের বগীবিল থেকে শুরু হয়ে সিলঘাট (তেজপুর), পাণ্ডু (গুৱাহাটী) এবং জোগিঘোপা হয়ে ধুবড়িতে শেষ হবে এই যাত্রা। অনুষ্ঠানগুলিতে থাকবে শিল্প প্রতিযোগিতা, কুইজ, নৃত্য পরিবেশন, যেখানে আসামের মরান, মোতক, টি ট্রাইব, সোনোৱাল কাছাৰী, দেউৰী ও গোরখা সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে।
আইডব্লিউএআই পরিচালক প্রবীন বড়া বলেন, “ভূপেন দার সৃষ্টিকর্ম শুধু সঙ্গীত নয়, তারা ছিল মানবতা, ঐক্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বর। তাঁর গানগুলো ব্রহ্মপুত্রের নদীর মতো বিস্তৃত ও গভীর।”
এই বিশেষ অনুষ্ঠানে সঙ্গীতজ্ঞ সুনিতা ভূঁইয়া খৌণ্ড, ধ্রুবজ্যোতি ফুকন, অমৃত পৃতম, লোহিত গগৈ, সৈয়দ সাদুল্লাহ, এবং অনুপ জলোতাসহ অনেক বিশিষ্ট শিল্পীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ভিডিও প্রদর্শিত হবে।
সোমবার ডিব্রুগড়ের গুইজন থেকে যাত্রা শুরু হলেও আসামে ইতোমধ্যে জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর গুৱাহাটীস্থ ডঃ ভূপেন হাজারিকা সমন্বয় ক্ষেত্র-এ গভর্নর লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “ভূপেন দার জীবন ও গান মানবতার চিরন্তন বার্তা বহন করে। তাঁর মেলোডি আসামকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”
ডঃ ভূপেন হাজারিকা ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সাদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ‘সুধাকন্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত এই কিংবদন্তি গায়ক ও সঙ্গীত পরিচালক আজও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন।
এছাড়া ধুবড়ির সরকারী বালক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ডঃ হাজারিকার ১৯৩২ সালের ভর্তি রেজিস্টার প্রদর্শন করেছে, যা এই সাংস্কৃতিক মহাকাব্যের একটি উল্লেখযোগ্য স্মৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষভাবে, বিখ্যাত রাঁধুনী অতুল লাহকাৰ ডঃ হাজারিকাকে স্মরণ করে তাঁর প্রিয় ঐতিহ্যবাহী আসামীয়া খাবার পুনরায় তৈরির মাধ্যমে একটি বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি উৎসর্গ করেছেন।
পাশাপাশি, আসামের বিভিন্ন জেলাতেও ডঃ হাজারিকাকে স্মরণ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যার মধ্যে নগাঁওয়ের নুরুল আমিন স্টেডিয়ামে ১৫,০০০ শিক্ষার্থীর কণ্ঠে ‘মানুহে মানুহৰ বাবে’ গানের অনবদ্য পরিবেশনা অন্যতম।
জাতীয়ভাবে ২০১৯ সালে ভারতরত্ন পুরস্কারে ভূষিত এই সঙ্গীত মহারথীর জন্মশতবার্ষিকী উৎসব সমগ্র দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক ঐক্যের অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

